এক সপ্তাহে টিকা পেল ৯ হাজার অপেক্ষায় ২৫ হাজারের বেশি

চট্টগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

গত ১৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। শুরুতে নগরীর তিনটি কেন্দ্রে টিকা দেয়া হয়। তবে বর্তমানে চারটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। টিকাদান শুরুর পর গতকাল ২২ নভেম্বর পর্যন্ত (এক সপ্তায়) ৯ হাজার ২৯৬ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী- প্রথম দিন (১৬ নভেম্বর) ১ হাজার ৩৬৫ জন পরীক্ষার্থী টিকা নেয়। ১৭ নভেম্বর ১ হাজার ৯০২ জন, ১৮ নভেম্বর ১ হাজার ১৩৪ জন, ২০ নভেম্বর ১ হাজার ১৫৮ জন, ২১ নভেম্বর ১ হাজার ৮৫৪ জন এবং সর্বশেষ গতকাল (২২ নভেম্বর) ১ হাজার ৮৮৩ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী টিকা নিয়েছে। সবমিলিয়ে এক সপ্তায় ৯ হাজার ২৯৬ জন পরীক্ষার্থী টিকা পেয়েছে চট্টগ্রামে। যদিও চট্টগ্রাম মহানগরে এবার (২০২১ সালের) এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ হাজার। আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে তাদের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা শুরুর আগে মহানগরের ৩৫ হাজার এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে টিকার প্রথম ডোজের আওতায় আনার কথা জানিয়েছিলেন মাউশির (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর) কর্মকর্তারা। ২৫ নভেম্বরের মধ্যেই এ টার্গেট পূরণের কথা বলেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু যে গতিতে টিকাদান চলছে, তাতে এ টার্গেট অর্জন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছে। পরীক্ষা শুরু হতে সময় আছে ১০ দিনেরও কম। কিন্তু টিকা গ্রহনের অপেক্ষায় রয়েছে আরো ২৫ হাজারেরও বেশি পরীক্ষার্থী। সে হিসেবে দৈনিক কম হলেও তিন হাজার পরীক্ষার্থীকে টিকা দিতে হবে।
কিন্তু বর্তমানে গড়ে দেড় হাজার বা এর কম সংখ্যক পরীক্ষার্থী টিকা পাচ্ছে একদিনে। যার কারণে টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানো না হলে পরীক্ষা শুরুর আগে মহানগরের সকল পরীক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি স্বীকার করে মাউশি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর হোসাইন আহমেদ আরিফ ইলাহী আজাদীকে বলেন, আমরা চেয়েছিলাম পরীক্ষা শুরুর আগে মহানগরের ৩৫ হাজার এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে যাতে টিকার আওতায় আনা যায়। এই টার্গেট পূরণ করতে হলে টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু টিকা প্রয়োগে ভ্যাকসিনেটর (টিকাদান কর্মী) পাওয়া যাচ্ছে না। এই সংকটের কারণে কেন্দ্র বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এর আগে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীও ভ্যাকসিনেটর সংকটের কথা জানিয়েছিলেন।
অবশ্য ভ্যাকসিনেটর চেয়ে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রফেসর হোসাইন আহমেদ আরিফ ইলাহী বলেন, আমরা চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোন রেসপন্স পাইনি। সিটি কর্পোরেশন থেকে ভ্যাকসিনেটর পেলে টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাউশির কাছ থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। তিনি বলেন-মাউশির অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় চসিকের পক্ষ থেকে ২০ জন ভ্যাকসিনেটর দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা মঙ্গলবারই (আজ) ২০ জন ভ্যাকসিনেটর ওনাদের বুঝিয়ে দেব।
প্রসঙ্গত, শুরুতে যে তিনটি কেন্দ্রে টিকা প্রয়োগ করা হয় সেগুলো হল-
চট্টেশ্বরী সড়কের চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল (সিজিএস), ইস্পাহানি মোড়ের স্যার মরিস ব্রাউন ইন্টার ন্যাশনাল স্কুল এবং একে খান মোড়ের মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয়। অবশ্য, পরবর্তীতে মির্জা আহমেদ ইস্পাহানি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। নতুন করে ইউরোপীয়ান গ্রামার স্কুল এবং প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। এখন চারটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের এ টিকাদান কার্যক্রম চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেট টপ বক্স স্থাপনের সিদ্ধান্ত হাই কোর্টে স্থগিত
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতু দিয়ে চলতে পারবে না নতুন আনা ইঞ্জিন