কাবুলে উল্লাসে ছোড়া গুলিতে নিহত ১৭

পাঞ্জশিরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি

| রবিবার , ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

বিদ্রোহীদের দখলে থাকা শেষ প্রদেশ তালেবান যোদ্ধাদের দখলে এসেছে এমনটা শোনার পর বিজয়োল্লাসে গোষ্ঠীটির সদস্যদের আকাশের দিকে ছোড়া গুলিতে কাবুলে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। তালেবান কর্মকর্তারা শুক্রবার পাঞ্জশির দখলে নেওয়ার দাবি করলেও তালেবানবিরোধী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (এনআরএফ) কাবুলের উত্তরে অবস্থিত প্রদেশটির পতন ঘটার খবর উড়িয়ে দিয়েছে।
তালেবান সূত্রগুলোর পাঞ্জশির জয়ের দাবির পরপরই কাবুলে ‘আকাশের দিকে গুলি ছোড়ার’ ঘটনায় অন্তত ১৭ জন নিহত ও ৪১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা শামসাদ। আরেকটি বার্তা সংস্থা টোলোও হতাহতের একই সংখ্যা দিয়েছে। মকাবুলের পূর্বদিকে অবস্থিত নানগারহার প্রদেশেও একইরকমভাবে ‘উল্লাসে গুলি ছোড়ার’ ঘটনায় ১৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক রাজধানী জালালাবাদের একটি এলাকার এক হাসপাতালের মুখপাত্র গুলজাদা সানগার। ‘উল্লাসে গুলি ছোড়ার’ এসব ঘটনায় জড়িতদের তীব্র ভাষায় তিরস্কার করেছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
রাজধানী কাবুলের উত্তরে হিন্দুকুশ পর্বতমালায় অবস্থিত পাঞ্জশিরে শুক্রবার রাতে তুমুল গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তালেবানের তিনটি সূত্র থেকে পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের দাবি করা হয়। তবে তাদের এ দাবির বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তালেবানের একজন কমান্ডার বলেছেন, ‘আফগানিস্তান এখন পুরোপুরি আমাদের দখলে। বিশৃঙ্খলাকারীরা পরাজিত হয়েছে, এবং পাঞ্জশির এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে।’ এদিকে তালেবানের জয়ের দাবি উড়িয়ে দিয়ে পাঞ্জশিরের তালেবানবিরোধী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) মুখপাত্র আলী নাজারি বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে’ তালেবানকে পিছু হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী যোদ্ধাদের অন্যতম নেতা সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ টেলিভিশন স্টেশন টোলো নিউজকে বলেছেন, তার পালিয়ে যাওয়ার যে খবর বেরিয়েছে, সেটি মিথ্যা। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আছি এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা তালেবানের হামলার মুখে আছি, আমরা মাটি কামড়ে আছি, আমরা প্রতিরোধ করছি।’
গত ১৫ অগাস্ট রাজধানীসহ কাবুলসহ আফগানিস্তানের বেশিরভাগ এলাকা তালেবানের দখলে চলে গেলেও পাঞ্জশিরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে তালেবানবিরোধীরা। দুই দশক আগে, এই পাঞ্জশিরেই মুজাহিদিন নেতা আহমেদ শাহ মাসুদ তালেবানের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে প্রতিরোধ টিকিয়ে রেখেছিলেন। নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার কয়েক মাস পর এই অঞ্চলকেই যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা বাহিনীর ‘লঞ্চপ্যাড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আর এনআরএফ এর মুখপাত্র ফাহিম দাশতি বলেছেন, দুটি ফ্রন্টে এনআরএফ ও তালেবানের মধ্যে লড়াই হছে। এতে তালেবানের সাড়ে তিনশ সদস্য নিহত হয়েছে এবং আরও বহু তালেবান আটক হয়েছে। দাশতির ওই দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতালেবানে কে এই বারাদার
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক কোহিনূর’