কাপ্তাই লেকে কচুরিপানা, নৌযান চলাচলে দুর্ভোগ

কাপ্তাই প্রতিনিধি | বুধবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাই লেকের বিশাল এলাকা জুড়ে কচুরিপানা জমে আছে। কচুরিপানার জন্য লেকে নৌযান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। যে পথ পার হতে আগে ২ মিনিট সময় লাগতো এখন সেই পথ পাড়ি দিতে ২ ঘন্টা সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। একবার কচুরিপানার জটে আটকা পড়লে ঘন্টার পর ঘন্টা চেষ্টা করেও উদ্ধার হওয়া যায়না। কাপ্তাই লেকে কচুরিপানার জন্য স্বাভাবিক নৌ চলাচল বর্তমানে অস্বাভাবিক হয়ে পড়েছে।
কাপ্তাই উপজেলার দুর্গম ভাইজ্যাতলি এলাকায় অবস্থিত ভাইজ্যাতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আক্তার জানান, আমরা পূর্বে প্রতিদিন কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকায় চড়ে স্কুলে যাতায়াত করতাম। জেটিঘাট থেকে স্কুলে আসতে আমাদের ৪০ মিনিট সময় লাগতো। এখন কচুরিপানার জটে পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার হচ্ছে। ফলে স্কুলের স্বাভাবিক কার্যক্রম থমকে পড়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সেনাবাহিনীর কাপ্তাই জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল গাজী মোহাম্মদ মিজানুল হক বলেন, সাধারণ পাবলিকের পাশাপাশি কচুরিপানার কারণে সেনাবাহিনীর বোটও লেকে ঠিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। দূর-দূরান্ত থেকে কচুরিপানা এসে কাপ্তাই জেটিঘাটে জড় হচ্ছে। যার ফলে জেটিঘাট থেকে নৌযান নিয়ে বাহিরে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত কচুরিপানা অপসারণ করা না হলে মানুষের দুর্ভোগ আরো চরমে উঠবে বলেও তিনি অভিমতে জানান।
৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ জানান, লেক থেকে কচুরিপানা অপসারণের দায়িত্ব কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের। মানুষের সমস্যার কথা আমরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত লেক থেকে কচুরিপানা অপসারণের কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাপ্তাই লেক থেকে কচুরিপানা অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার কাপ্তাই লেক পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, মূলত কাপ্তাই লেক বিশাল হলেও এই লেকের নিচু এলাকা হলো কাপ্তাই জেটিঘাট। আবার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে পানির স্রোতধারা কাপ্তাইয়ের দিকেই প্রবাহিত হয়ে থাকে। যে কারণে পানির টানের সাথে কচুরিপানা কাপ্তাইয়ের দিকে আসতে থাকে। কচুরিপানার কারণে নৌযান চলাচলসহ সর্বসাধারণের অসুবিধার কথা স্বীকার করে ব্যবস্থাপক বলেন, এতদিন লেকে পানির পরিমাণ কম ছিল। বর্তমানে ১০৫ ফুটের বেশি পানি রয়েছে লেকে। এখন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে স্পিলের মুখ কিছুটা খুলে দিয়ে পানির সাথে কচুরিপানা কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে। ছেড়ে দেওয়া কচুরিপানা পানির স্রোতের সাথে সাগর মহাসাগরে মিশে যাবে। এর আগেও এভাবে কাপ্তাই লেকের কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছিল বলেও তিনি জানান। তবে কবে কখন কাপ্তাই লেক থেকে কচুরিপানা অপসারণ করা হবে সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কিছু জানান নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবশেষে প্রাণ ফিরেছে বিচারে, যুক্তিতর্ক শুরু
পরবর্তী নিবন্ধগৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ, দম্পত্তি গ্রেপ্তার