চেন্নাই টেস্টে জিতে আগেই সিরিজে এগিয়ে ছিল ভারত। বৃষ্টিবিঘ্নিত কানপুর টেস্টে ড্র করার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু ম্যাচটির পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের দেওয়া ৯৫ রানের লক্ষ্য মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে টপকে যায় স্বাগতিকরা। কানপুর টেস্ট ৭ উইকেটে জিতে শেষ ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ তে জিতেছে রোহিত শর্মার দল।
কানপুর টেস্টের প্রথম দিন খেলা হয় মাত্র ৩৫ ওভারের। পরের দুই দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও বাংলাদেশকে ভারত হেসেখেলে হারিয়েছে। স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি করেছেন যশস্বী জয়সোয়াল। ফিফটি করেছিলেন প্রথম ইনিংসেও। তার অর্ধশতকে ভর করে মাত্র ১৭.২ ওভারে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) কানপুর টেস্টের শেষ দিনে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল টেস্টটা ড্র করার। হাতে ছিল ৮ উইকেট, ৯৮ ওভার ছিল সামনে। তার দুই তৃতীয়াংশের বেশি যদি খেলে ফেলতে পারত বাংলাদেশ, তাহলেই ড্র করার মতো রসদ চলে আসত দলের হাতে।
তবে বাজে শট সিলেকশনের পুরোনো রোগ বয়ে ফিরলে কি তা আর হয়? হয়নি। দিনের শুরুতে মুমিনুল হকের বিদায়টা নাহয় মানা যায়। রবীন্দ্র জাদেজা আর রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সুইপ করে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন, সেই সুইপ খেলতে গিয়েই বিদায় নেন তিনি।
ক্রমেই নির্ভরতা জাগাতে থাকা সাদমান ইসলাম আর নাজমুল হোসেন শান্তর আত্মাহুতি দিলেন রীতিমতো। শুরুটা করেন শান্ত। ইনিংসে প্রথম বারের মতো আক্রমণে আসা জাদেজাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। ৫৫ রানের জুটিটা ভেঙে যায় তাতে।
সে জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরে বাংলাদেশের ইনিংসও। তার মূলেও ওই শট সিলেকশনই। সাদমান ফিফটির পর অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন গালিতে। লিটন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন কাট করতে গিয়ে। সাকিব ফিরতি ক্যাচ দিলেন জাদেজাকে। ৩ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট খুইয়ে বাংলাদেশ কোণঠাসা হয়ে পড়ে একেবারে।
এরপর মেহেদি হাসান মিরাজও খুব বেশিক্ষণ টেকেননি। দেয়াল তুলে দাঁড়াতে পারেননি তাইজুল ইসলামও। ৯ উইকেট চলে যাওয়ার ফলে মধ্যাহ্ন বিরতি আরও ৩০ মিনিট পিছিয়ে দেয়া হয়।
মুশফিকুর রহিম একাই চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের ইনিংসটাকে দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার। তবে তার চেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি। বিরতির আগে শেষ বলে তিনি জাসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হন। তাতে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় ১৪৬ রান তুলে।
পুঁজিটা ছিল মোটে ৯৪ রানের। তবে এরপরও বাংলাদেশ রণে ভঙ্গ দেয়নি। অধিনায়ক শান্ত স্রেফ স্পিনারদেরই ব্যবহার করেছেন শেষ ইনিংসে। তার ফলও পেয়েছেন মিরাজরা। তৃতীয় ওভারে রোহিত শর্মাকে আউট করে মিরাজই প্রথম ব্রেক থ্রুটা এনে দেন দলকে। তিনে আসা শুভমান গিলকে পঞ্চম ওভারে সাজঘরে ফেরালেন তিনিই।
তবে এরপর যশস্বী জয়সওয়াল আর বিরাট কোহলির ৫৮ রানের জুটি ম্যাচের সব অনিশ্চয়তা দূর করে দেয়। জয় থেকে ৩ রান দূরে দাঁড়িয়ে জসওয়াল বিদায় নেন ৫১ রান করে। তাতে ভারতের জয়টা থামানো যায়নি। ঋষভ পান্ত এসে চার মেরে দলের জয় তুলে নেন। ভারত ৭ উইকেটে জেতে ম্যাচটা, আর বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয় ২-০ ব্যবধানে।