‘কলেজিয়েটস’ : কেন এতো ভালোবাসি তারে

সৈয়দা সেলিমা আক্তার | বুধবার , ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:১৩ পূর্বাহ্ণ

কলেজিয়েটস নিয়ে এত প্রশংসা কেন করি? প্রশ্নটার উত্তরে লিখতে বসা। লাল দালান ঘেরা বিশাল মাঠের স্কুলটা আমাদের এলাকাতেই। এ স্কুলের আরেকটি বৈশিষ্ট্য দেয়াল ঘেঁষে কৃষ্ণচূড়া গাছ। এ গাছের ছায়াতলে আমার স্কুলে আসা যাওয়ার পথ। আমার দুইভাইয়ের একজন এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র। আমার বড় ভাই আমাদের বই কিনে দিতেন বেড়াতে নিয়ে যেতেন। আর আরবি পড়াতেন সহীহ করে, নামাজও শিখিয়েছেন। কলেজিয়েটস ভাইটা অংকে বেশ পাকা ছিলো। তাঁর চিন্তা ছিলো আমার অংকে বেশি নাম্বার পাওয়ার। স্যার থাকার পরও তাঁর টেনশন। এস.এস.সির অংক পরীক্ষায় ওর কারণে বেশি নাম্বার আসে আমার। রাত জেগে অংক করিয়েছেন। গেটে পায়চারি করতো পরীক্ষা কেমন দিলাম সে চিন্তায়। আর স্কুলের গল্পও বলতো সে। খোলা মাঠ লাল দালান চোখে ভাসতো। আমি আর ও পিঠাপিঠি ভাইবোন। খেলায়ও সে বেশ পাকা। দাবা, ক্যারাম, ব্যাডমিন্টন এত্তো এত্তো পুরস্কার পেতো ভাইটা আমার। সাইকেল খেলা, কলাগাছে তীর ছোড়া, ওর ঘুড়ি ওড়ানোতেও পিছু পিছু আমি। তবে ও আমাকে সামনে যেতে বলতো। পথের পাঁচালির অপুকে স্বপ্নের দুয়ার খুলেছিলো দূর্গা আমাকে আমার কলেজিয়েটস ভাইটি। আর একজন সাহিত্যের মানুষের লেখা অবাক হয়ে ছোটবেলায় দেখতাম। সবখানে তাঁর লেখা আজাদী, পূর্বকোণ, শিশু। বিশ্বসাহিত্য থেকে প্রকাশিত আসন্নতেও। বড় ভাইয়া কিনে আনতেন পত্রিকাগুলো। কলেজিয়েট স্কুলের ওই ছাত্রের লেখা দেখে আমিও উৎসাহিত হতাম লিখতে। তাঁকে তখন দেখিনি, দেখেছি অনেক পরে। তাঁর সুবাদেই স্পাউস অফ কলেজিয়েটস হয়ে। এ পরিবারের একজন হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। সে ভীষণ বুদ্ধিমান মানুষ-কোনো এক বসন্তদিনে ভালোবাসা দিবসে। তাঁর স্কুলের সামনে আমাকে গোলাপ দেওয়ার স্মৃতি ক্যামেরাবন্দি করে। কৃতজ্ঞতা আজন্ম তার প্রতি। লাল দালানের তাঁর স্কুল ও গোলাপ দেয়া দুটোই ভালোলাগার ও ভালোবাসার। সে সাথে সেও প্রিয়জন। এরকম টুকরো টুকরো স্মৃতির ঝাঁপি আছে যা রঙিন ও আনন্দের অনুভূতি তৈরি করে। অনেক গুনীজনরা এ স্কুলে পড়েছেন। এখানকার ছাত্রদের বন্ধুত্ব ও একতা এককথায় অসাধারণ। এসব কিছু মিলিয়ে বোধকরি কলেজিয়েটসদের প্রশংসা করতে পছন্দ করি-ভালো লাগে!

পূর্ববর্তী নিবন্ধফাগুয়া
পরবর্তী নিবন্ধদূরের টানে বাহির পানে