করোনা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে নোটিশ

| শুক্রবার , ২৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা এবং অনলাইনে শতভাগ ক্লাস নেওয়া তথা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। নোটিশপ্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও প্রচার এবং ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে যৌথ কমিটি গঠন করে অনলাইনে শতভাগ ক্লাস নেওয়া তথা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা পর্যায়ে ডিজিটাল শিক্ষা কনটেন্ট তৈরির পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় রিট দায়েরসহ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। গত ২৭ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে এ নোটিশ পাঠানো হবে। খবর বাংলানিউজের।
আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠক, ভার্চুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবাসহ বিভিন্ন অনলাইন সেবা কার্যক্রম সরকার সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করছে। করোনা মহামারি সময়ে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, ই-কমার্সে কেনাকাটা বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ৫০ লাখ। আর এসব কিছুর ব্যাকবোন ছিলো ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক।
আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগের ক্লাস রুমগুলো ছোট, পর্যাপ্ত পরিষ্কার টয়লেট নাই এবং স্থানের স্বল্পতাও আছে। ফলে করোনাকালীন নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করা অসম্ভব। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান চালু করা হলে প্রতিটি শিক্ষাথীর সঙ্গে অভিভাবকরাও যাবেন। ব্যাপক যানবাহনের সমাগম হবে। ফলে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হবে না। এছাড়া শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগ শিক্ষক শিক্ষিকার বয়স ৪০ এর ওপরে হওয়ায় তাদেরও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ১ম-৫ম শ্রেণি পর্যন্ত এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ছোট হওয়ায় মুখে মাস্ক সব সময় পড়া, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মানা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে ব্যাপক আশংকা ও সংশয় আছে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলা হলে শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলবে, ক্লাস রুমে একে অন্যের সঙ্গে আগের মতন মেলামেশা করবে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকা,কর্মকর্তা-কর্মচারী,অভিভাবক-শিক্ষাথীদের মধ্যে ব্যাপক আকারে দ্রুত করোনা ছড়িয়ে পড়ায় আশংকা রয়েছে। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। শিক্ষা গ্রহণের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে সরকার প্রতিটি জনগণের জান মালের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য। তাই করোনা মহামারি সময়ে যেহেতু অনলাইনে পাঠদানের সুযোগ আছে সেহেতু জীবন সংশয়ের আশংকা রেখে করোনা মহামারি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সঠিক হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিটুমিন সঙ্কটে প্রকল্পে স্থবিরতা
পরবর্তী নিবন্ধভীতি কাটাতে টিকা নিলেন ভিআইপিরা