সম্মেলনের ছয় মাসের মধ্যে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের ৩৫ সদস্যের আংশিক কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হলেও মহানগর এবং উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটি সাত মাসেও ঘোষণা করা হয়নি। দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণার কয়েকদিন পর উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটি ঘোষণার আগ মুহূর্তে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বাধ সাধেন। এতে আটকে যায় উত্তর জেলার কমিটি।
তবে শেষ মুহূর্তের খবর হলো উত্তর জেলা ও মহানগর যুবলীগের কমিটির রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে কোনো সময় ঘোষণা করা হতে পারে উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটি। এরপর মহানগরের কমিটি। মহানগর ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের শর্ট লিস্ট তৈরি করা হয়েছে। এই শর্ট লিস্ট থেকে শীর্ষ নেতা (সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক) চূড়ান্ত করার কাজ করছেন যুবলীগ চেয়ারম্যন।
উত্তর জেলা যুবলীগের কমিটির সভাপতি পদে ৭ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন প্রার্থী হয়েছেন। এদের সবাইকে ছাপিয়ে নানা সমীকরণে নেতৃত্বের দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন পাঁচজন। কমিটির শীর্ষ দুই পদে এগিয়ে থাকা পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে দুজন হলেন সভাপতি আর তিনজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। প্রথম দিকে উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও যুবলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য হাটহাজারীর রাশেদ খান মেননকে যথাক্রমে সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার কথা চাউর হলেও নানা কারণে সেটা আটকে যায়। এরপর থেকেই মূলত কমিটি নিয়ে নতুন সমীকরণ শুরু হয়।
উত্তর জেলা যুবলীগের শর্ট লিস্ট যারা : নতুন সমীকরণে যাদের নাম আলোচনায় এসেছে,
তারা হলেন সভাপতি পদে উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সহসভাপতি নুরুল মোস্তাফা মানিক। রাশেদুল আলম জেলা যুবলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি হাটহাজারীর উপজেলা চেয়ারম্যান। নুরুল মোস্তফা মানিক জেলা যুবলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। তার বাড়ি মীরসরাইয়ে।
শেষ মহূর্তে কমিটির ধরন এমনও হতে পারে, উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ ও হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম সভাপতি এবং নুরুল মোস্তফা মানিককে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে। অথবা নুরুল মোস্তফা মানিককে সভাপতি এবং মিজানুর রহমান মিজান, রাশেদ খান মেনন, শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু এবং আবু তৈয়বকে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে। আবার এস এম রাশেদুল আলমকে সভাপতি এবং মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে। তবে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক যে কোনো একজন হাটহাজারী থেকে আসবে বলে জানা গেছে।
যদিও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি যুবলীগের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ। তবে যুবলীগ চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছে এই প্রতিবেদক।
মহানগর যুবলীগের শর্ট লিস্টে যারা :
প্রথম দিকে মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম দিদার ও দেবাশীষ পাল দেবু এবং এম আর আজিম যথাক্রমে সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণার কথা চাউর হলেও নানান সমীকরণে সেই জুটি থেকে সরে আসা হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এখন নতুন সমীরণে নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য ও সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পাল দেবুকে সাধারণ সম্পাদক করার চিন্তা–ভাবনা চলছে। এছাড়াও সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন–দিদারুল আলম দিদারকে সভাপতি এবং এম আর আজিম এবং দেবাশীষ পাল দেবু, আরশেদুল আলম বাচ্চু, নুরুল আনোয়ার, আসিফ মাহমুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফজলে রাব্বী সুজনকে সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে। এছাড়াও সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামও। অপরদিকে গুরুত্বপূর্ণ পদের তালিকায় আছেন, ওয়াহিদুল আলম শিমুল, সুমন দেবনাথ, এ কে এম শহীদুল কাওসার, জবেদুল আলম সুমন, নুরুল আজিম রণি।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২৮ মে, উত্তর জেলার ২৯ মে এবং মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হয়েছিল ৩০ মে। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে কমিটির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে যেতে পারেননি কাউন্সিলররা। কমিটির বিষয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন শেষ হয়েছিল।