কক্সবাজারে পুলিশের উপর হামলায় মামলা, গ্রেফতার ১০

কক্সবাজার সৈকতের সেই ৫২ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | রবিবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:৫৬ অপরাহ্ণ

কক্সবাজার শহরের সমুদ্র তীরবর্তী সেই ৫২ অবৈধ স্থাপনা (দোকান) উচ্ছেদকালে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ৫৩ জনকে এজাহারনামীয় ও ৭-৮ শত ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে আজ রবিবার (১৮ অক্টোবর) কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। এ মামলায় আটক ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় সেই ৫২ অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় পুলিশ।
এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। সংঘর্ষ থামাতে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।
প্রায় আধঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর পুলিশের শক্ত অবস্থানের মুখে পিছু হটে অবৈধ দখলদাররা।
সংঘর্ষে কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীরুল গীয়াস ও যমুনা টিভির কক্সবাজার প্রতিনিধি নুরুল করিম রাসেল, সাংবাদিক ইকবাল বাহার চৌধুরীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপি ও সরকারদলীয় নেতাসহ ১০ জনকে আটক করে।
এ ঘটনায় ৫৩ জনকে এজাহারনামীয় ও ৭-৮ শত ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে রবিবার কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আটক ১০ জনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
গ্রেফতার আসামীরা হলো বখতিয়ারউদ্দিন, আজিজুল হক, মো. ইসমাইল, জয়নাল আবেদীন, মো. কাসেম, জয়নাল আবেদীন কাজল, সরওয়ার আলী, মংচিং চাক ও আমিনুল ইসলাম মুকুল।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) জানায়, কক্সবাজার পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দেয়।
পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন অবৈধ দখলদার উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট একটি রুল জারি করে উচ্ছেদ কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপীল বিভাগে আবেদন করলে গত ১ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেন। আর এ রায়ের পরই জেলা প্রশাসন ও কউক এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকেও এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গিয়েছিল প্রশাসন। পরে দখলদারদের প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে এবং মালামাল সরানোর জন্য স্থাপনা মালিকদের শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় কিন্তু এরপরও অবৈধ দখলদাররা তাদের স্থাপনা না সরিয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রমে বাধা প্রদান করে।
এর নেপথ্যে সরকারি দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবায়েজিদে দখলমুক্ত হলো ৪০ শতক জায়গা
পরবর্তী নিবন্ধবসনিয়ার জঙ্গলে বাংলাদেশীরা