ওয়াহিদুল হক : জীবনবাদী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

| বৃহস্পতিবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২২ at ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

ওয়াহিদুল হক। বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন প্রবলভাবে জীবনবাদী ও জাগরণবাদী। ওয়াহিদুল হকের জন্ম কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল মনোহারিয়া গ্রামে ১৯৩৩ সালের ১৬ মার্চ। বাবা মাজহারুল হক ১৯৪৬এ বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্কুল জীবন থেকেই ওয়াহিদুল প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। কর্মের পাশাপাশি শিল্পের নানাদিকে জড়িয়ে রেখেছিলেন নিজেকে। ১৯৫৬ সালে ‘দ্য ডেইলি মর্নিং নিউজ’ পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবনের সূচনা। এছাড়াও কাজ করেছেন ‘পিপল’, ‘উইকলি ওয়েব’, ‘ডেইলি নিউ নেশন’, ও ‘ডেইলি স্টার’ পত্রিকায়। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন কিছুদিন। পরবর্তী সময়ে ‘দৈনিক ভোরের কাগজ’ ও ‘দৈনিক জনকণ্ঠ’ পত্রিকায় কলাম লিখতেন নিয়মিত। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে রবীন্দ্র সংগীত চর্চা ও প্রসারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ। এছাড়া আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ, শিশুতীর্থ, আনন্দধ্বনি প্রভৃতি সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। শুদ্ধ সংগীত ও শিল্পের অনুশীলন, অধ্যয়ন ও প্রসার, প্রমিত বাংলা উচ্চারণ ও বাচনিক উৎকর্ষ সাধন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক স্বদেশ এসবের মধ্যেই তিনি পেতে চেয়েছিলেন সমাজ ও মানুষের মুক্তি। ‘সকল কাঁটা ধন্য করে’ নামে রবীন্দ্র সংগীতের একটি অ্যালবাম রয়েছে তাঁর। তিনি রচনা করেছেন সংগীত বিষয়ক তিনটি প্রবন্ধ ‘গানের ভেতর দিয়ে’, ‘চেতনা ধারায় এসো’, এবং ‘সংস্কৃতি জাগরণের প্রথম সূর্য’। তিনি ছিলেন বিশুদ্ধ ও নির্মোহ মানব চর্চার শুদ্ধ শিল্পী। ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধগণপরিবহনে ধূমপান বন্ধ করুন