ওয়াসার বিলিং পদ্ধতি ডিজিটাল হচ্ছে

প্রথম পর্যায়ে বসানো হবে ৫ হাজার প্রি-পেইড মিটার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩০ জুন, ২০২১ at ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

গ্রাহক হয়রানি ও অনিয়মরোধে ডিজিটাল হচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির বিলিং পদ্ধতি। বিরাজমান পোস্টপেইড মিটারের পরিবর্তে পুনঃস্থাপন করা হবে প্রি-পেইড মিটার। প্রথম পর্যায়ে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে বসানো হবে পাঁচ হাজার প্রি-পেইড মিটার। প্রি-পেইড মিটারিং সিস্টেম চালু হলে পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাবে সিস্টেম লস তথা এআরডব্লিউ’র (নন রেভিনিউ ওয়াটার) আড়ালে বাইপাস লাইনের মাধ্যমে পানি চুরি। এজন্য বিলিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নে ইতোমধ্যে এএমআর (অটোমেটেড মিটার রিডিং) মিটার স্থাপনে অটোমেশন প্রকল্প হাতে নেয় ওয়াসা।
পাইলট প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে বেছে নেয়া হয়েছে নগরীর ওআর নিজাম আবাসিক এলাকা, তৎসংলগ্ন হিলভিউ আবাসিক এলাকা, জামাল খান ও চান্দগাঁও আবাসিক এলাকাকে। এ চার আবাসিক এলাকায় স্থাপন করা হবে তিন হাজার চারশ এএমআর মিটার। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে তিন কোটি ২১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ আজাদীকে জানান, অটোমেশন পদ্ধতি চালুর জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুমোদন হয়ে গেছে। এখন টেন্ডার আহবান করা হবে। করোনায় অনেকটা সময় চলে গেছে। এজন্য একটু সময় লাগছে। আগামী মাসে আমরা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যেতে পারবো। জানা গেছে, অটোমেশন পদ্ধতি চালু হলে গড়বিল বলে ওয়াসায় আর কিছু থাকবে না। বিল নিয়ে গ্রাহকদের ঝামেলাও থাকবে না।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আজাদীকে জানান, এএমআর (অটোমেটেড মিটার রিডিং) মিটার স্থাপনের প্রথম সুবিধা হচ্ছে মিটার ইন্সপেক্টরের কোন কার্যক্রম থাকবে না। এখন সনাতন পদ্ধতিতে একজন মিটার ইন্সপেক্টরকে ২ হাজার মিটার দেখে বিল করতে হয়। দেখা যায়, তিনি দেড় হাজার মিটার দেখে রিড করতে করতে আর ৫শ’ মিটার দেখতে পারেননি সময়ের কারণে। এই ৫শ’ মিটারে গড় মিল হয়েছে। পরবর্তী মাসে আগের মাসের ৫শ’ মিটার থেকে কাজ শুরু করতে করতে দেখা গেছে শেষের ৫শ’ রয়ে গেছে। এ ভাবে গড় বিল হয়।
এএমআর মিটার সংযোজন হলে গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে আর মিটার চেক করে রিডিং নিতে হবে না। মিটারে থাকা ডিভাইস রিডারের হাতে থাকা লকারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিডিং পৌঁছে দেবে। অর্থাৎ রিডার এলাকা দিয়ে লকার নিয়ে ঘুরে আসলে ওই এলাকার সকল মিটারের রিডিং চলে আসবে। অফিসে গিয়ে কম্পিউটারে ইনপুট দিলে যাবতীয় ডাটা চলে আসবে। আবার মিটারের ডিভাইস নষ্ট হলে অটোমেটিক সংকেত দেবে। জানা গেছে, পরীক্ষামূলকভাবে এ ধরনের পাঁচটি মিটার গত বছর বসানো হয়েছিল। ওয়াসার কারিগরি বিভাগ এগুলোর পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে।
প্রসঙ্গত. চট্টগ্রাম ওয়াসার বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা ৭৩ হাজার। বিশাল সংখ্যক এ গ্রাহকের রিডিং দেখে বিল করেন মাত্র ৪৩ জন মিটার ইন্সপেক্টর। বর্তমানে ওয়াসা মাসে রাজস্ব পায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। প্রিপেইড মিটারে যা ব্যাপকভাবে বাড়বে, এমন আশা সংশ্লিষ্টদের।
গতকাল ওয়াসার ৬২ তম বোর্ড সভায় মিটারের অটোমেশন প্রক্রিয়ার টেন্ডার দ্রুত করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।সভায় ওয়াসার বোর্ড সদস্যবৃন্দ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহসহ ওয়াসার উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজরুরি কারণ ছাড়া বাইরে বের হলে ‘কঠোর’ শাস্তি
পরবর্তী নিবন্ধবায়েজিদে প্রতারক চক্রের ফাঁদে বিটিএমসির সম্পদ