এ যেন প্রকৃতির প্রতিশোধ

শ্রীধর দত্ত | বুধবার , ২৭ জুলাই, ২০২২ at ৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ষড়ঋতুর স্বাভাবিক নিয়মেই আষাঢ় শ্রাবণ মাসে অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়বে। বহু প্রাচীনকাল থেকে আবহমান বাংলায় এ ধারা প্রাকৃতিক নিয়মে প্রচলিত ছিল। কিন্তু মানবজাতি প্রকৃতির উপর আধিপত্য বিস্তারের কারণে প্রকৃতি সময়ের সাথে সাথে দূরে সরে যাচ্ছে। এখন আষাঢ় শ্রাবণ মাসকে বর্ষাকালের মত মনে হয় না। মানুষ প্রকৃতির উপর যেভাবে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে তাতে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই বিমুখ না হয়ে কী করবে! চট্টগ্রাম শহরের অঙিজেনের প্রাণকেন্দ্র সিআরবিতে আমরা গাছ কেটে হাসপাতাল নির্মাণ করার চিন্তাভাবনা করি। আমরা বনের গাছ কেটে উজার করে পশু পাখির বাসস্থান নষ্ট করছি, আমরা পাহাড় কাটছি, আমরা নদী দখল করে নদীর নাব্যতা নষ্ট করছি, আমরা কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ নদীতে ফেলছি। সুজলা সুফল আমাদের দেশ যেন মরুভূমির ধার প্রান্তে আসছে। এখন বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় না, বর্ষাকালে গ্রীষ্মের তপ্ত রোদের মতো ছটফট করতে হয়। গ্রামে এখন গাছ তলায়, বটতলায় রাখাল বাঁশি বাজায় না, এখন গাছের ডালে চির চেনা দোয়েলের শিস শোনা যায় না, এখন বিলে খালে শাপলা শালুক ফোটে না, এখন নদীতে ডিঙি নৌকা আর চলে না। আমাদের সেই ছেলেবেলা হারিয়ে গেছে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে কত খেলা। আমাদের সময় সপ্তাহ দশ পনের দিন থেমে থেমে এক নাগাড়ে বৃষ্টি হতো; সূর্যমামাকে তাও স্বল্প সময়ের জন্য দেখা যেতো। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হয়তো এগুলো জাদুঘরে স্থান পাবে। প্রকৃতির প্রতি আমাদের প্রেম ভালোবাসা দরদ এবং সুরক্ষায় সজাগ দৃষ্টির রাখতে হবে। পরিবেশের সুরক্ষায় আমাদের প্রত্যেক নাগরিককে সচেতন হতে হবে তবেই প্রকৃতি আমাদেরকে বৃষ্টি দিবে শীতল বাতাস দিবে। এ প্রকৃতি আমাদের বেঁচে থাকার সম্পদ। এ প্রকৃতি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনাবিল সুখ শান্তির প্রতীক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমার আমি
পরবর্তী নিবন্ধনৈতিকতার অবক্ষয় রোধে সচেতন হওয়া প্রয়োজন