এসএসসি পরীক্ষা শুরু, প্রথমদিন অনুপস্থিত ৮০৯ জন

কলেজিয়েট স্কুলের এক কক্ষে সিকিউ প্রশ্নপত্র আধঘণ্টা দেরিতে সরবরাহ, দুই শিক্ষককে শোকজ

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার প্রথমদিনে গতকাল ৮০৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। গতকাল বাংলা প্রথম পত্রের (আবশ্যিক) পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ১৪৭ জন।

এদিকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের এক কক্ষে পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র আধঘণ্টা দেরিতে দেয়ার ঘটনায় দুই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। একই সাথে ঘটনা অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গতকাল সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন চট্টগ্রামে ১২৮ কেন্দ্রে ৮৮ হাজার ৫৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ৮৮ হাজার ৪৩ জন। ৫১৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। কঙবাজারে ৩১টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৯৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ১৮ হাজার ৮০২ জন। অনুপস্থিত ছিল ১৪৬ জন।

রাঙামাটি জেলায় ২১টি পরীক্ষা কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অংশ নেয় ৬ হাজার ১৫৬ জন। অনুপস্থিত ছিল ৪০ জন পরীক্ষার্থী। খাগড়াছড়ি জেলায় ২৪ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৭ হাজার ৩১১ জনের মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৭ হাজার ২৪৩ জন এবং অনুপস্থিত ছিল ৬৮ জন। বান্দরবান জেলায় ১৫টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪ হাজার ১৩০ জনের মধ্যে অংশ নেয় ৪ হাজার ৯৪ জন এবং অনুপস্থিত ছিল ৩৬ জন পরীক্ষার্থী। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সর্বমোট ২১৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে মোট ৮০৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চট্টগ্রামের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র নাথ গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, ২০২৪ সালের প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ দিন বাংলা পরীক্ষায় মোট ১ লাখ ২৫ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ২৪ হাজার ৩৩৮ জন পরিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। তিনি জানান, এবার সর্বমোট ৭২টি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়। এরমধ্যে সাধারণ ভিজিল্যান্স টিম ৬০টি এবং বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম ১২টি। প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে উল্লেখ করে প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, পরীক্ষার পরিবেশে কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। সবগুলো কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের একটি কক্ষে প্রশ্নপত্র আধাঘণ্টা দেরিতে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া পরীক্ষায় প্রথমে বহুনির্বাচনী উত্তরপত্র (এমসিকিউ) দেয়া হয়। এর জন্য ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ ছিল। বহুনির্বাচনী পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই সৃজনশীল বা রচনামূলক পরীক্ষা হয়। দুটি পরীক্ষার মাঝখানে কোনো বিরতি না থাকলেও ওই কক্ষে দুজন পর্যবেক্ষক বহুনির্বাচনী পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের রচনামূলক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেননি।

নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর ওই কক্ষের পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র ও খাতা দেয়া হয়। এতে ওই কক্ষে থাকা ৪০ জন পরীক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা পরে সিকিউর উত্তরপত্র লিখার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে বেলা ১টায় পরীক্ষা শেষের ঘণ্টা পড়লে তাদের খাতা নিয়ে নেয়া হয়। এরমধ্যে একজন পরীক্ষার্থী বাইরে চলে যায়।

সকাল সাড়ে ১০টার পরিবর্তে ১১টা ২ মিনিটে শিক্ষার্থীদের রচনামূলক প্রশ্নপত্র সরবরাহ করলেও আবার ঠিক দুপুর ১টায় উত্তরপত্র নিয়ে ফেলার অভিযোগ করে পরীক্ষার্থীরা। এরপর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে আধাঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়। বেলা ১টায় খাতা নিয়ে নেয়ার পর হল থেকে বেরিয়ে যাওয়া ছাত্রকেও গেট থেকে ফিরিয়ে এনে আধঘণ্টা পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

পরীক্ষার্থীরা ঠিকঠাক পরীক্ষা শেষ করে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুইজন শিক্ষককে তাৎক্ষণিক শোকজ করা হয়। শোকজের জবাব দেওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উক্ত কক্ষে যে দুজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছিলেন তারা বলেন, এমসিকিউর পরে সিকিউ দেয়ার জন্য দেয়া ঘণ্টা তারা শুনেননি। এতে করে সময় গড়িয়ে গেলেও তারা সিকিউর প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের দেননি।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র নাথ বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এই ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাত মাসে ৮ হাজার কোটি টাকার ওষুধ রপ্তানি, যাচ্ছে ১৫৭ দেশে
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু জেলে থেকেও আন্দোলনকারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতেন