এলইডি বাতি স্থাপন প্রকল্পের কাজ শুরু ফেব্রুয়ারিতে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ

আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হচ্ছ নগরের প্রতি ওয়ার্ডের ১০ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি স্থাপন প্রকল্পের কাজ। ২৬০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ প্রকল্পের আওতায় ৪১ ওয়ার্ডে মোট ৪৬৬ কিলোমিটার সড়কে এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পে ভারত ২১৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা ঋণ সহায়তা করবে। বাকি ৪৬ কোটি ৪৩ লাখ ৫ হাজার টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার। ভারত এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ঋণ সহায়তার অর্থ প্রদান করবে। ব্যাংকটির বাংলাদেশ প্রতিনিধি অলোক বাড়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিটি মেয়র রেজাউল করিমের সঙ্গে তার বহাদ্দারহাট বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় মেয়র ঋণ সহায়তা দেয়ায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দুই দেশের দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় ভিত্তির সোপান নির্মিত হবে। তখন অলোক বাড়া বলেন, যাচাই-বাছাইয়ের পর ভারত সরকার ঋণ সহায়তার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেছি। এখন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ফেলে আশা করছি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু করতে পারব। এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বর্তমানে অনেক সড়কে এনার্জি বাল্ব আছে। সেগুলো দিয়ে খুব বেশি ভালো রেজাল্ট পাচ্ছি না। এলইডি লাইট প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রতি ওয়ার্ডের ১০ কিলোমিটার সড়ক আলোকিত হবে। এরপর অলিগলির যেসব সড়ক বাদ থাকবে সেগুলোর জন্য আলাদা প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির পরিকল্পনা আছে আমার। আমার টার্গেট শহরের আনাচে-কানাচেও যেন বাতি জ্বলে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি দক্ষতা উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের ‘টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ এবং ভারতের ‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিস লিমিটেড (ইইসিএল)’ এর সঙ্গে ২০১৭ সালে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে এলওসি-৩ (লাইন অব ক্রেডিট) এর আওতায় প্রকল্পে ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ ঋণ সহায়তা দেয়ার কথা ভারতের। ‘মর্ডানাইজেশন অব সিটি স্ট্রিট লাইট সিস্টেম অ্যাট ডিফারেন্ট এরিয়া আন্ডার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৮ সালে পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) এবং ২০১৯ সালের ৯ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছিল। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আছে।
একনেকে অনুমোদন পেলেও ভারত থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন না পাওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারছিল না চসিক। সর্বশেষ চুক্তির শর্ত অনুয়ায়ী, গত ১৫ জুন ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে দরপত্র কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারত ‘এনার্জি ইফিসিয়েন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড’, ‘সিগনিফাই ইনোভেশন্স ইন্ডিয়া লিমিটেড’ এবং ‘শাপর্জি পালনজি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড’ নামে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শর্ট লিস্ট সরবরাহ করে। এরপর চসিক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক ও চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশ আজাদীকে বলেন, এক্সিম ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে চূড়ান্ত রেজাল্ট পাব। তারা কাকে চূড়ান্ত করেছে সেটা আমাদের জানাবে। চূড়ান্ত হয়ে গেলে কাজ শুরু করতে পারব।
প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় শহরের ৪১ ওয়ার্ডে ৪০, ৬০, ১০০ ও ২৫০ ওয়াটের ২০ হাজার ৬০০টি এলইডি বাতি, ২০ হাজার ২৬৭টি জিআই পোল এবং ৫০৭টি কন্ট্রোল সুইচ বক্স বসানো হবে। পাঁচ মিটারের বেশি প্রশস্ত সড়কগুলোতে এসব বাতি লাগানো হবে। এছাড়া হাইড্রোলিক বীম লিফটার ও ইলেকট্রিক্যাল ইক্যুপমেন্ট সংগ্রহ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধআগুন লাগল-ছড়াল কীভাবে