মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নগরীতে নালায় পড়ে ব্যবসায়ী এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনা মেনে নেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন বিশিষ্ট নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান। তিনি বলেন, এসব ঘটনা যে কোন শহরের জন্য অত্যন্ত বেদনার। এ ধরনের ঘটনা শহরের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি করছে। স্থপতি আশিক ইমরান বলেন- এমন ঘটনা ঘটলে শহর বাসযোগ্য হয় কীভাবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্পের কাজের জন্য মানুষকে অনেক দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, এই প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব ছিল কিনা কিংবা দুর্ভোগ আরো অনেক সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব ছিল কিনা।
স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, যখনই কোনো দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে তখনই একটি সেবা সংস্থা আরেকটি সেবাসংস্থাকে দোষারোপ করে। দায় এড়ানোর প্রবণতা প্রকট হয়ে ওঠে। এটি কোন অবস্থাতেই কাম্য নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, শহরটা আমাদের। এই শহরটাকে বাসযোগ্য রাখাই সব সেবা সংস্থার দায়িত্ব। প্রত্যেকটি সেবা সংস্থা শহরের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। এই দায় কেউ এড়াতে পারে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকায় খাল নালা রয়েছে। কয়েকশ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এসব খাল নালা পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু যেসব এলাকায় জনসমাগম বেশি, যেখানে রেলিং বিহীন কালভার্ট আছে কিংবা যেখানে খাল এবং নালার গভীরতা বেশি ওই জায়গাগুলো চিহ্নিত করে নিরাপত্তা বেষ্টনি দেয়ার প্রয়োজন ছিল। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করা কিংবা সচেতন করার কোন দায়িত্ব কেউ পালন করেননি। এক একটি মর্মান্তিক ঘটনার পর আমরা আলোচনা করি, কিছুটা আশাও করি। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা সব ভুলে যাই, আমরা আশাহত হই।
চট্টগ্রাম শহরের সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা প্রকট। এই সমন্বয়হীনতার কারণেই একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, সেবা সংস্থাগুলো সমন্বয়ের মাধ্যমে বিষয়গুলোর দেখভাল করলে পরিস্থিতি এমন হতো না। দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। এবার নিশ্চয় সেবা সংস্থাগুলো নিজেদের মধ্যে বসে ভালো কিছু উদ্যোগ নেবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি সিটি কর্পোরেশনকে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পন্থায় আবর্জনা ব্যবস্থাপনা এবং খাল নালার ব্যাপারে আরো বেশি সতর্ক ও সজাগ হওয়ার আহ্বান জানান।












