এভাবে কাঁচামালের দাম লাগামহীন হলে অস্তিত্ব বিপন্ন হবে

ইঞ্জিনিয়ার তানভীর শাহরিয়ার রিমন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

নির্মাতা প্রতিষ্ঠান র‌্যাংকস এফসি লিমিটেডের সিইও ইঞ্জিনিয়ার তানভীর শাহরিয়ার রিমন বলেছেন, গেল এক বছরে নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে আমরা রীতিমতো দিশেহারা। রডের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ, সিমেন্টের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, ইটের ২০ শতাংশ, পাথরের ৯ শতাংশ, বালির ৮ শতাংশ, ইলেকট্রিক ক্যাবলের ৫৫ শতাংশ, হোলোবঙের ১০০ শতাংশ, ইউপিভিসি পাইপের ৩৬ শতাংশ, রঙের ২৬ শতাংশ, অ্যালুমিনিয়ামের ২৯ শতাংশ। অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধির পরও আমরা ফ্ল্যাটের দাম এক শতাংশও বাড়াইনি। উল্টো সার্ভিসে ভ্যালু এড করেছি। কিন্তু এভাবে যদি কাঁচামালের দাম লাগামহীন হয়ে যায় তাহলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
তিনি বলেন, দেখুন, আমরা যে ধরনের ডিজাইনের বিল্ডিং বানাই সেখানে রডের প্রপরশন প্রায় ২০ শতাংশ। নরমাল ডিজাইনের একটি ভবন করতে যেখানে বর্গফুট প্রতি ৫ কেজি রড ব্যবহার করা হয়, সেখানে আমাদের অভিনব ডিজাইনের কারণে ৮ থেকে ১২ কেজি রড প্রয়োজন হয়। আবার ফেয়ার ফেইস কনক্রিটের ডিজাইনের ফলে হোয়াইট সিমেন্ট এবং উচ্চদামের গ্রে সিমেন্ট ব্যবহার করতে হয়। এতে করে আমাদের নির্মাণ খরচ অনেক বেড়ে গেছে। নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের ওপর বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ চাপিয়ে দিয়েছে।
তানভীর শাহরিয়ার রিমন বলেন, বিল্ডিংয়ের কাজ শুরুর সময় যখন আমরা সব হিসেব নিকেশ করি তখন মাত্র ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ধরে হিসেব কষা হয়। এখন ওই ১০ শতাংশ দিয়ে ৫০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি সামাল দেয়া অসম্ভব। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমাদের নির্মাণ ব্যয় একেবারে কম করে হিসেব করলেও ৫শ টাকা বেড়ে গেছে। একই সাথে সাপ্লাই চেইন সিস্টেম ভেঙে পড়ার দশা। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে স্ক্র্যাপের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সাথে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মারাত্মক সংকট তৈরি করছে। এই সংকট সহসা কমার লক্ষণ নেই।
তিনি বলেন, আমরা তো লস করে ব্যবসা করতে পারব না। আর এ কারণে হলিস্টিকভাবে পুরো বিষয়টা সামলাতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। ভূমি মালিকদের বাস্তবতা বুঝতে হবে। তারা যেভাবে এখনো অযৌক্তিক হিস্যা এবং নগদ টাকা চান সেটাও কিন্তু জমির মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের কিছু কিছু ডেভেলপারের অসুস্থ প্রতিযোগিতাও এখানে দায়ী। গ্রাহকদেরকেও বুঝতে হবে যে তারা যদি নিজেরা বাড়ি করতে যেতেন তাহলে এই মূল্য বৃদ্ধির ফলে তাদের বাজেটও ফেল করত। এই অবস্থায় সরকার, ডেভেলপার, ভূমি মালিক, লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান এবং গ্রাহকদের বাস্তবতা বুঝে সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এই শিল্পের স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপদ প্রত্যাশীরা ঢাকায়, প্রথম দিন বায়োডাটা জমা দিলেন ১৮ জন
পরবর্তী নিবন্ধনির্মাণ-সংশ্লিষ্ট পণ্যের আকাশ ছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে পুুরো সেক্টর