এবার ঝালকাঠিতে ট্রাকচাপায় লাশ হলো ১৪ জন

| বৃহস্পতিবার , ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ঝালকাঠি সদর উপজেলায় গাবখান ব্রিজের কাছে একটি ট্রাক তিনটি ইজিবাইক ও একটি প্রাইভেট কারকে চাপা দিলে শিশুসহ অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে ঝালকাঠির শহরতলীর গাবখান ব্রিজের টোলপ্লাজায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চারটি ইজিবাইকে কনের বাড়ির লোকজন ঝালকাঠির ছাগলকান্দার শশীর হাটে বরের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে গাবখান সেতুতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন দুটি ইজিবাইকের যাত্রী। এতে ঘটে প্রাণহানির এই ঘটনা। এর আগের দিন মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকাখুলনা মহাসড়কে সদর উপজেলার কানাইপুরের তেঁতুলতলা এলাকায় ফরিদপুর সদরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজনসহ ১৪ জন নিহত হন। এতে আহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। নিহতরা সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঝালকাঠি শহরমুখী একটি সিমেন্টবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা তিনটি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয়। এবং বাহনগুলিসহ ট্রাকটি পাশের খাদে পড়ে যায়। আহতদের মধ্যে ১১ জনকে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং কয়েকজনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। আহতদের মধ্যে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন দুজন। বাকিরা ঝালকাঠিতেই মারা গেছেন।

বরিশালে মারা যাওয়া দুজন হলেনপিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার মেসন্ডা এলাকার সুবিদ আলী হাওলাদারের ছেলে মো. রুহুল আমিন (৭০) এবং ঝালকাঠি সদর উপজেলার রামনগর এলাকার বাদশা মিয়ার প্রতিবন্ধী ছেলে মো. শহীদুল ইসলাম (৩৫)

পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বৌভাত অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন রুবেল হোসেন (৩০)। যে দুটি ইজিবাইক আগেই টোল প্লাজা পার হয়ে যায় তার মধ্যে ছিলেন তিনি। ফলে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান রুবেল। পরে খবর পেয়ে তিনি আহত স্বজনদের নিয়ে বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন।

রুবেল হোসেন বলেন, গাবখান ইউনিয়নের ওস্তকার মাঝি বাড়ি থেকে কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ছাগলকান্দা শশীর হাটে যাইতেছিলাম বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠানে। গাবখান ব্রিজ পার হইয়া চারডা অটো (ইজিবাইক) নিয়া যাইতেছিলাম। দুইটা অটো পাশ কইরা গেছে। দুইটা টোল দিতেছিল। পেছন থেকে ট্রাক আইসা আমরার ওই দুইটা অটো প্লাস আরও দুইটা অটোরে মাইরা দিছে। ব্রেক ফেইল কইরা মাইরা দিয়া ও নিজে গর্তে পইড়া গেছে। রুবেল বলেন, নিজেদের পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে; আহত আছে আরও সাতজন।

দুর্ঘটনায় সব মিলিয়ে কতজন মারা গেছে এটা জানেন না রুবেল। তবে তার ধারণা গাড়ির নিচে লোক আছে। বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত রুহুল আমিনের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তার মেয়েজামাই গাবখানের বাসিন্দা হেমায়েত উদ্দিন। তিনি বলছিলেন, ছাগলকান্দা আমরা ভাইঝি বিয়া দিছি। সেইখানে আমরা মেলা করছি (রওনা দিয়েছি)। আমরা সামনের গাড়িতে, তারা পিছের গাড়িতে, অটোতে। চারডা অটোতে মেলা করছি; দুইডা অটো সামনে গেছে। দুইডা পিছে টোল দেয়; আর ট্রাক আইয়া মাইরা দিছে। আমাগো লোক মারা গেছে পাঁচছয়জন।

ঝালকাঠির রামনগরের বাদশা মিয়ার ছেলে সাইদুল বলেন, তার প্রতিবন্ধী ভাই শহীদুল (৪৫) গাবখানে ভিক্ষা করেন। তিনি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাদক কারবারে বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি
পরবর্তী নিবন্ধবারৈয়ারঢালায় ঝরনা দেখতে গিয়ে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের