রানী রাতের নয়, রানী রাজনীতির। রানীর সাকার রূপের ভেতর পুজো হয় নিরাকার মায়ের। মায়ের আত্মার পরমফুল হবে নিত্য অঞ্জলি। প্রণাম হবে, ধনুচি আরতি হবে, মহাপ্রসাদের আশীর্বাদ পাবে সবাই। কেন্দ্রবিন্দু হলেন পবিত্র শিবে দেবী দশভুজা। তবে আমার আক্ষেপ রক্তমাংসের দুর্গাদের কেনো অঞ্জলি দেয়ার প্রয়োজন মনে হয় না? কেনো এখনো তাদের কচি ফুলের পাপড়ি ভর্তার প্লেটে রাখা হয়? কেনো সব পুজোর থালায় তাদের জায়গা হয় না? রক্ত মাংসের দুর্গার অপরাধ কোথায়? ওহ্! তাদের কোনো অলৌকিক শক্তি নেই তাই? কে বললো? যদি তাদের কোনো অলৌকিক শক্তি থাকতো তবে তাদের ভিতর আরেক তার জন্ম কিভাবে হয়? প্রতিটি নারী পৃথিবীর বাল্ব।এই যে দেবী দুর্গা। তিনিও রাজনীতিতে যুদ্ধ করে মহিষাসুর কে বধ করে ধর্মে আলো দিয়েছেন। তবে এখন যখন কোনো নারী রাজনীতির মাঠে নামে কেনো তার দিকে কোণা চোখে তাকানো হয়? দেবী দুর্গার প্রতিমার প্রথম মাটি দেয়া হয় সে দুঃখ পাড়ার মাটি থেকে। যেখানে জীবন্ত দুর্গাগুলো আর্তনাদে রোজ আত্মহত্যা করে।এই যে মাটি দেয়ার নিয়মটা এটাই প্রমাণ করে যে একেকজন নারী একেকজন দুর্গা। দেবী দশভুজার দশ রূপের প্রতিজনই বিদ্রোহী নারীর রূপ। যারা শুধু মঙ্গল স্থাপনে তথা ধর্ম স্থাপনে রুদ্র মূর্তিতে প্রকাশ পেয়েছেন। আমরা যারা এ চারদিন, মা দুর্গার চোখে ধার্মিক সাজার লক্ষ্যে অঞ্জলি দেবো, কাপড় বিতরণ করবো, নারীর ভূয়সী প্রশংসা করবো, দয়া করে এ চারদিন পরেও তার কিয়দংশ পরিমাণ ভালো দৃষ্টি নারীদের প্রতি বজায় রাখবেন। ভাজক ভাজক খেলার চোখে নারীকে দেখবেন না। আমি পাপ পুণ্য প্রেম বুঝি না। আমি বুঝি প্রজনন শক্তি। প্রেমের চেয়ে প্রজনন শক্তির মূল্য অনেক বেশি। প্রজননে বংশ বৃদ্ধি হয়। সৃষ্টির বিকাশ হয়। সভ্যতা সৃষ্টি হয়। আর এ প্রজনন শুধুমাত্র নারী দুর্গাদের দ্বারা হয়।