একশ’ টাকার নিচে নেমেছে ডলারের দাম

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২০ মে, ২০২২ at ৭:৫০ পূর্বাহ্ণ

খোলাবাজারে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। একশ’ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া ডলারের দাম গত দুইদিনে গড়ে চার টাকার মতো কমেছে। গতকাল সাড়ে ৯৬ টাকায় ডলার বিক্রি হয়েছে। বছরের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে চার দফায় টাকার অবমূল্যায়ন ডলারের কার্ব মার্কেটকে অস্থিতিশীল করে তোলে। লাগামহীন এই পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমতে শুরু করার ব্যাপারটি সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
গত বেশ কিছুদিন ধরে ডলারের দাম হু হু করে বাড়ছে। ৮৬/৮৭ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে ডলারের দাম ১০০ টাকারও বেশিতে গিয়ে ঠেকে। চট্টগ্রামের কার্ব মার্কেটে ১০১ টাকা পর্যন্ত ডলার কেনাবেচা হয়েছে।
সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলারের দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার অবমূল্যায়ন করে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর বাজার আরো একদফা লাফিয়ে উঠে। বাজার চড়া হওয়ার পাশাপাশি সংকটও প্রকট হয়ে উঠে। বাজারে গুজব রটে যায় যে, শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে সব টাকা দিয়ে ডলার কিনছেন। এতে ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিষয়টিকে স্রেফ গুজব হিসেবে ইতোমধ্যে উড়িয়ে দিয়েছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডলারের দাম এবং শেয়ারবাজার নিয়ে নানামুখী গুজবের মধ্যে গত দুইদিন ধরে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল সর্বশেষ কার্ব মার্কেটে ৯৬.৫০ টাকায় ডলার বিক্রি হয়েছে। অবশ্য কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ৯৫ টাকারও কমে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার কিনেছেন। ডলারের দর কমতে থাকায় স্বস্তিও ফিরতে শুরু করেছে। কয়েকদিন ধরে অস্থিরতায় ভোগা কার্ব মার্কেটে গতকাল কিছুটা স্বস্তি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ডলারের বর্তমান দরকেও অনেক চড়া বলে উল্লেখ করে বলেছেন, এটা কোনো অবস্থাতেই স্বাভাবিক দর নয়। সবসময় কার্ব মার্কেটে ব্যাংক রেটের সাথে ২/৩ টাকা পার্থক্য থাকে। ১০ টাকা পার্থক্য থাকার ব্যাপারটি পুরোপুরি অস্বাভাবিক।
গতকাল চট্টগ্রামের একাধিক মানি এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা এবং কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে যে, ডলারের দাম কিছুটা কমেছে। দুদিন আগে প্রতি ডলারের দাম ১০১ টাকা হয়েছিল। আজ আমরা ডলার ৯৬ থেকে ৯৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করছি। আমরা কিনেছি ৯৫ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৯৬.৫০ টাকা দরে।
বাজারে ডলারের কোনো সংকট নেই বলে উল্লেখ করে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কত ডলার লাগবে আপনার? এক ঘণ্টা সময় দিন। যোগাড় করে দিচ্ছি। সংকটের কথা বলে বাজারকে অস্থির করা হচ্ছে বলেও তারা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, দেশে ডলারের বিনিময় মূল্য অনেকদিন ধরে ৮৫.৮০ টাকা ছিল। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে প্রথম টাকার অবমূল্যায়ন করে ডলারের দাম ২০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এরপর ২৩ মার্চ আবারো টাকার অবমূল্যায়ন করে ডলারের দাম ২০ পয়সা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৮৬.২০ টাকা। এক মাসের মাথায় গত ২৭ এপ্রিল আবারো ২৫ পয়সা বাড়িয়ে দর নির্ধারণ করা হয় ৮৬.৪৫ টাকা। গত ৯ মে ডলারের বিনিময়মূল্য আবারো ২৫ পয়সা বাড়িয়ে ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ গত সোমবার (১৬ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার প্রতি বিনিময়মূল্য ৮০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে। বছরের মাত্র ৫ মাসের মধ্যে দফায় দফায় টাকার অবমূল্যায়ন করে ডলারের দর নির্ধারণ কার্ব মার্কেটে চরম অস্থিতিশীলতা তৈরি করে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডলারের দাম কমতে শুরু করার ব্যাপারটিকে ইতিবাচক বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে মহাসড়ক অবরোধ বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজার রুটের জন্য আসছে ১৫০টি মিটারগেজ কোচ