একই স্থানে একাধিক ট্রাফিক বক্স কেন?

দেওয়ানহাট ও নতুন ব্রিজ মোড়

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ মার্চ, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

নগরীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক ডিভাইডার কিংবা লাগোয়া খালি স্থানে রয়েছে ট্রাফিক বক্স। পরিবহন ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের সাময়িক বিশ্রামের জন্য বলা হলেও এসব স্থাপনা নিয়ে আছে সমালোচনাও। তারপরও একই স্থানে নির্মিত হচ্ছে একাধিক ট্রাফিক বক্স। নগরীর দেওয়ানহাট ও নতুন ব্রিজ মোড়ে নির্মিতব্য এ ধরনের দুটি স্থাপনা নির্মাণের অর্থের উৎস নিয়েও সমালোচনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর নতুন ব্রিজ মোড়ে নির্মিত হচ্ছে দ্বিতল ট্রাফিক বক্স। ওই স্থানে আগে থেকে রয়েছে দুটি ট্রাফিক বক্স। ওই বক্সের লাগোয়া ফুটপাতে বসানো হয়েছে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের টেক্সির স্ট্যান্ড। অন্যদিকে দেওয়ানহাট মোড়ে কদমতলী-দেওয়ানহাট ফ্লাইওভারের নিচে খালি জায়গায় নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে ট্রাফিক বক্স। এখানেও আগে থেকে রয়েছে একটি ট্রাফিক বক্স।
নতুন ব্রিজ ও দেওয়ানহাট মোড়ে স্থানীয় অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোড়গুলোতে দায়িত্বরত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্টদের কিছু দালাল রয়েছে। এসব দালাল নিজেদের ট্রাফিক পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচয় দেয়। মোড় দিয়ে যাতায়াতকারী কোনো গাড়ি ট্রাফিক সার্জেন্ট কিংবা টিআইয়ের টার্গেট হলে এসব দালাল গিয়ে গাড়ির চালক ও হেলপারদের সাথে দরকষাকষি করে। বিশেষ করে দিনের বেলা চলাচলকারী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপকে বেশি টার্গেট করা হয়।
নতুন ব্রিজ মোড়ে মো. নেজাম নামে এক পিকআপ চালক বলেন, বাঁশখালী থেকে সবজি নিয়ে আসি। মান্থলি টোকেন থাকলে কোনো সার্জেন্ট গাড়ি আটকালেও টোকেন দেখালে ছেড়ে দেয়। টোকেন না থাকলে একশ থেকে দুইশ টাকা দিতে হয়। ট্রাফিকরা সরাসরি টাকা নেয় না। এখানে কিছু দালাল আছে, তাদের হাতে টাকা দিতে হয়। দালালরা ট্রাফিক বক্সে গিয়ে ট্রাফিকদের টাকাগুলো দেয়।
একটি থাকার পরও আরেকটি ট্রাফিক বক্স নির্মাণের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে এই প্রতিবেদককে অফিসে যাওয়ার অনুরোধ করেন সিএমপি পশ্চিম জোনের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই প্রশাসন) বিপ্লব হোসেন। অফিসে গেলে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান তিনি।
নতুন ব্রিজ মোড়ে দ্বিতল ট্রাফিক বক্স নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে টিআই (বাকলিয়া) শামসুদ্দোহা দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগেরটি ভেঙে নতুন করে সংস্কার করছি। ট্রাফিক বক্সটি নির্মাণে অর্থায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নিজেরাই করছি। এখানে বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি হলে দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না। জনবহুল জায়গা, লোকজনও কোথাও দাঁড়াতে পারে না। তাই আমাদের কমিশনার স্যার এটি করে দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবীর চৌধুরী আজাদীকে বলেন, শুধু ট্রাফিক বক্স নয়, পুলিশের প্রতিষ্ঠানিক স্থাপনাগুলোর নির্মাণ ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে হবে, এটি কাক্সিক্ষত। এসব স্থাপনা তৈরিতে কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হলেও কারোর এ ধরনের অর্থ দেয়ার সুযোগ নেই। যদি এসব অর্থের ঘোষিত উৎস না থাকে, এসব কাজে নিয়মমাফিক ঠিকাদার নিয়োজিত না থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়। এ ধরনের স্থাপনা তৈরিতে ব্যয়িত অর্থ সংস্থানের ব্যাখ্যা থাকা জরুরি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের ৬ ইটভাটা মালিককে আদালত অবমাননার নোটিশ