উড়িষ্যার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮৮ জন হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা ৮০৩। যাদের মধ্যে ৫৬ জনের আঘাত গুরুতর। উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন জোরকদমে চলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজ। এ মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে উঠে এল সিগন্যালের ত্রুটি। রেল কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এক যৌথ রিপোর্টে সিগন্যালের ত্রুটির কথা বলছেন কর্মকর্তরা। তবে এটি প্রাথমিক রিপোর্ট। বিস্তারিত তদন্তের পর দুর্ঘটনার কারণ আরও স্পষ্ট হবে।
যৌথ পরিদর্শন রিপোর্টে বলা হয়েছে, আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি সেই লাইনে ঢোকেনি। ট্রেন ঢুকেছিল লুপ লাইনে। সেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তার সঙ্গে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়। এর মাঝে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু–হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কিন্তু মেইন লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস কীভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ক্ষেত্রে সিগন্যাল দেওয়ায় কোনো গোলমাল হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে এককালীন ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লাখ টাকা এবং অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দুর্ঘটনায় পতিত করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি ছিল ২৩ বগির ট্রেন। তার অন্তত ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই ছিল যে, মালগাড়ির উপরে উঠে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। একাধিক বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এসব বগি সরিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রেললাইন ঠিক করে আবার কবে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। দক্ষিণ ভারতগামী বহু ট্রেন এই দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করতে হয়েছে।
ঘটনাস্থলে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। সকাল থেকে সেখানে আছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
