উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চসিক-বন্দর বৈঠক আজ

পুনর্মূল্যায়িত পৌরকর

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৯ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

পৌরকর নির্ধারণে ২০১৭ সালে পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন করেছিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) কাছে প্রস্তাবিত পৌরকর ছিল ১৬০ কোটি ১৬ লাখ টাকা। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে পঞ্চবার্ষিকী কর পুনর্মূল্যায়ন কার্যক্রম স্থগিত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। যা গত বছরের ১৫ অক্টোবর প্রত্যাহার করা হয়। এরপর চবককে পুনর্মূল্যায়নের আলোকে পৌরকর পরিশোধ করতে বলে চসিক। কিন্তু আপত্তি জানায় সংস্থাটি। এ অবস্থায় ধার্যকৃত পৌরকর আদায় নিয়ে বিপাকে পড়ে চসিক। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ বৃহষ্পতিবার বৈঠকে বসছে সংস্থা দুটি।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে করপুনর্মূল্যায়নের পর নিয়ম অনুযায়ী আপিল করেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। স্থগিতাদেশের কারণে যা ওই সময় নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয় নি। যদিও বর্তমানে সেখান থেকে সরে এসে সংস্থাটি নতুন করে কর পুর্নমূল্যায়ন বা রি-এসেসমেন্ট করার দাবি করেছে। এ বিষয়ে গত ১৫ মার্চ চসিকের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সভাও হয়েছিল। এতে নতুন করে কর পুনর্মূল্যায়ন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সে অনুযায়ী যৌথ কমিটিও গঠন করা হয়। অথচ কর বিধি ১৯৮৬ আলোকে পঞ্চবার্ষিক মূল্যায়নকৃত গৃহকরের বিপরীতে কর পুনর্মূল্যায়নের কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নির্বাহী কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক দৈনিক আজাদীকে বলেন, পুনরায় এসেসমেন্ট করার সুযোগ নাই। বন্দর বলছে, ২০১৭ সালে যে এসেসমেন্ট করা হয়েছে সেখানে ত্রুটি থাকতে পারে। ত্রুটি আছে কীনা তা খতিয়ে দেখতে কমিটি করা হয়েছে। এটা কোনো আপীলের বিষয় না আবার রি-এসেসমেন্টও না।
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, আইন অনুযায়ী রি-এসেসমেন্ট করা যাবে না। তারা আপীল করতে পারে। কমিটি হয়েছে। দুই পক্ষ বসে সিদ্ধান্ত হবে।
চসিক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের পূর্বে চবকের স্থাপনার বিপরীতে পৌরকর ধার্য করা হয়েছিল ২০১১ সালে। একই বছরের নভেম্বর মাসে দুই সংস্থার মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছিল। এর আলোকে চসিককে প্রতি অর্থ বছরের পৌরকর বাবদ ৩৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে হবে চবককে। যা সারচার্জ মওকুফের সুযোগ নিয়ে সংস্থাটি ৩৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করে আসছে। ২০১৭ সালের পুনর্মূল্যায়িত পৌরকর আদায় করতে পারলে চসিকের রাজস্ব আদায় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এতে ত্বরান্বিত হবে নগর উন্নয়ন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন ২০২১ এর চূড়ান্ত খসড়া গত ৫ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। নতুন এ আইনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ শতাংশ অর্থ চসিককে প্রদানের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদন হলেই প্রতি বছর বন্দরের আয় থেকে এক শতাংশ পাবে চসিক। এক্ষেত্রে মোট আয় থেকে নাকি নীট মুনাফা থেকে দেবে তা স্পষ্ট হয়নি। এদিকে বন্দরের আয় পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সংস্থাটি নীট মুনাফা করেছে ৭২৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যার এক শতাংশ হলে চসিক পাবে ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা। একই অর্থ বছরে বন্দরের আয় হয়েছিল তিন হাজার ১৬৬ কোটি ২২ লাখ। সরাসরি আয়ের বিপরীতে হলে চসিক পাবে ৩১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অথচ ২০১৭ সালের প্রস্তাবিত পৌরকর আদায় করতে পারলে চসিকের আয় কয়েক কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবসুন্ধরার এমডির আগাম জামিন আবেদন
পরবর্তী নিবন্ধভয়াল ২৯ এপ্রিল আজ