উত্তাপ ছড়ানোর পর কমছে আদার দাম

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে ৫০ টাকা চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ বাজারে বেড়েছে সরবরাহ

জাহেদুল কবির | শনিবার , ১৭ জুন, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ সময় উত্তাপ ছড়ানোর পর অবশেষে কমছে আদার দাম। পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কমেছে কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা চীন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আদা আমদানি করতে পারেনি। ফলে হঠাৎ করে আদার বাজার অস্থির হয়ে উঠে। এছাড়া চীনে আদার বুকিং দরও বেড়ে যায়। তাই ব্যবসায়ীরা আদার আমদানির জন্য বিকল্প বাজার যেমন ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভারতের শরণাপন্ন হয়। বর্তমানে বাজারে আদার সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমতির দিকে রয়েছে।

ভোক্তারা বলছেন, আদা যারা আমদানি করেন, তাদের আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের তুলনা করে যদি বাজার তদারকি করা হয়, তবে আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ সামনে কোরবানির ঈদ। তখন আদার চাহিদা বেড়ে যাবে। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে আবার দাম বৃদ্ধি করবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আদার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি ভিয়েতনামের আদা বিক্রি হচ্ছে ১৭০১৯০ টাকায়, মিয়ানমারের আদা ২০০২২০ টাকা এবং থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়। খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, বর্তমানে বাজারে আদার সরবরাহ সংকট নেই। দামও আগের তুলনার কমতির দিকে রয়েছে। আসলে চীনে আদার বুকিং দর যখন আড়াই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়, তখন আমদানিকারকরা ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ওই সব দেশেও বুকিং দর বাড়ে। ফলে আদার বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। এখন ভালো খবর হচ্ছে, আদার দাম কমছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার পুরোপুরি ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। সরকারের কোনো সংস্থা অভিযান চালাতে গেলেও তাদের বাঁধার মুখে পড়তে হয়। কোনো পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১ ডলার বাড়লেও সাথে সাথে তারা দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ যেসব পণ্যের দাম তারা বাড়িয়ে দেন, সেগুলো কিন্তু আগে আমদানি করা। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের বুকিং রেট কমে গেলে তখন কিন্তু তারা পাইকারি বাজারে দাম কমিয়ে দেয় না। তাছাড়া, যাদের বাজার মনিটরিং করার কথা, তারা সেভাবে মাঠে নেই। এতে কিন্তু ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ীরা সুবিধাটা নিয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক পণ্য নিয়ে কারাসাজি করে। এখন আদার দাম কমছে, আবার কিছুদিন পর দেখা যাবে সরবরাহ সংকট অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়াচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅপহৃত রোহিঙ্গা নেতা ফিরেছেন চার লাখ টাকা মুক্তিপণে
পরবর্তী নিবন্ধজয়ের সুবাস পাচ্ছে বাংলাদেশ