উচ্চ শিক্ষায় বিদেশে যাওয়ার আগে জেনে নিতে হবে

জিন্নাহ চৌধুরী | শনিবার , ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ

উচ্চশিক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, নারীরা অনেকে পেশাজীবীও হচ্ছেন, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। অনেক অভিভাবক এখনো কেবল মেয়ের ‘ভালো বিয়ে’ দিতে তাকে উচ্চশিক্ষিত করে তোলা দরকার বলে মনে করেন; এই মানসিকতারও পরিবর্তন দরকার। কেবল বিয়ের কথা না ভেবে মেয়েকে সমাজে স্বাধীনচেতা মানুষ হিসেবে, স্বাবলম্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে তোলার জন্য উচ্চশিক্ষিত করে তোলার কথা অভিভাবকদের গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে।

প্রয়োজন হলে সমর্থ থাকলে মেয়েকে দেশের বাইরে ও পাঠাতে হবে। তবে উচ্চ শিক্ষায় বাইরে পাঠাবার আগে যে সব বিষয় ভাববেন। প্রথমেই একজন শিক্ষার্থীকে ঠিক করতে হবে তিনি কোন দেশে পড়তে যেতে চান। কারণ একেকটি দেশের পড়াশোনার খরচ, ভর্তি চাহিদায় পার্থক্য আছে। দেশ বাছাইয়ের পরে ঠিক করতে হবে যে, আমার সাবজেক্ট ও আর্থিক সামর্থ্যের সঙ্গে মিলিয়ে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যেতে পারে। এক্ষেত্রেও একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বা চাহিদা, টিউশন ফির সঙ্গে আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্য থাকে।

যেহেতু আমার দুই মেয়ে কানাডায় পড়াশোনা করছে সেহেতু যারা সন্তানদের কানাডায় পাঠাতে চান তারা লক্ষ করুন। কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে আইইএলটিএস অবশ্যই থাকতে হবে। ৬ হতে ৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করতে হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে ভর্তি তথ্য, আবেদনের প্রক্রিয়াসহ সকল তথ্য বিস্তারিতভাবে থাকে। সকল কাগজপত্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি অগ্রিম পাঠাতে হবে।

শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাঠানো হয়। এরপর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সেখানেও পড়াশোনা করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসাবে চাকরি ও স্থায়ী বসবাসের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

ভিসা আবেদনের সময় আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ দেখাতে হবে। প্রায় সব দেশেই শিক্ষার্থী ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাস কর্মকর্তারা দেখতে চাইবেন যে, শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ও থাকাখাওয়ার খরচ সে বহন করতে সক্ষম কিনা? এলাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে টিউশন ফি হিসাবে অন্তত বছরে ১০/১২ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ২০/২২ লাখ টাকা খরচের সামর্থ্য থাকতে হবে।

এর সঙ্গে শিক্ষার্থীর থাকাখাওয়া, যাতায়াত, পোশাক, হাতখরচ, চিকিৎসা যোগ করতে হবে। এই খরচের টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিস্টারের ফি অগ্রিম পরিশোধ করতে হয়। বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। সেটি অবশ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন বীমা এজেন্সি করে থাকে, যেসব এজেন্সির নাম দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

অথবা ওখানে যেয়েও নিতে পারবে। কোনও ছেলে মেয়ে যদি বলে আমাকে এক সেমিস্টারের টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দিলে পরের বছর চাকরি করে আমার সেমিস্টার ফি যোগাড় করবো এটা মারাত্মক ভুল। যেই চাকরিই করুক না কেন সে সর্বোচ্চ থাকা খাবার ব্যবস্থা করতে পারবে। টিউশন ফি নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাকে ভালোবাসি
পরবর্তী নিবন্ধএছলামাবাদী প্রতিষ্ঠিত বরকল এস. জেড. হাই স্কুল সম্মিলন