বারো মাসে তের পার্বনের দেশ আমাদের বাংলাদেশ। নানা রকম আচার অনুষ্ঠান আর আনন্দে মেতে থাকতে চায় বাঙালি মন। বসন্ত, বৈশাখ, স্বাধীনতা কিংবা জাতীয় অনুষ্ঠানের মতো আমাদের আছে নানা ধর্মের নানা অনুষ্ঠান। এগুলোও আমাদের মূল ধারার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ধর্মীয় সংস্কৃতির একটি অংশ। আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে অন্যান্য ধর্মের উৎসবের মতো মুসলিমদের জন্যও ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ–গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দবহ। সংখ্যাধিক্য জনসংখ্যার এই দেশে সকলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন। আর তাই ঈদ উৎসবকে ঘিরে কেউ কেনে দশটি জামা, আর কেউবা একটিও কিনতে পারে না। কারো মুখে প্রাণখোলা হাসি আর কারো মুখ থাকে অনাহারে শুষ্ক। কপালে চিন্তার মোটা রেখা, সন্তান ও পরিবারের মানুষের জন্য ঈদ উৎসবে উপহার কিনবে কি করে! আমরাই পারি সকলের মুখে হাসি ফোটাতে। সহযোগিতা ও সমপ্রীতির মাধ্যমে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতে।একজন সুনাগরিক হিসেবে আরেক জন নাগরিকের পাশে দাঁড়ানো ও সহযোগিতা করা যেমন আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ঠিক একই ভাবে যাকাত, ফেতরা ও সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষকে সাহায্য করা আমাদের ধর্মীয় বিধান। তবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে পাশে থাকতে হবে সবার প্রথমে পরিবার ও আত্মীয়–স্বজনের হক আদায়ের মাধ্যমে। প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের জন্য অপব্যয় না করে পাশের প্রতিবেশী, কিংবা পথশিশু ও অসহায় ভাসমান মানুষগুলোকে যদি সহযোগিতা করে, একটি ঈদ উপহারের মাধ্যমে তাদের পাশে দাঁড়ায় তাহলে পুরো বাংলাদেশ হাসবে। ধনী–দরিদ্র, উঁচু–নিচু ভেদাভেদ থাকলেও ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নিয়ে আমরাও পাবো অনাবিল আনন্দ ও গভীর প্রশান্তি। তাই সহযোগিতা ও সহমর্মিতায় ঈদের উৎসব হয়ে উঠুক সবার কাছে আনন্দের ও ভালোবাসার।