‘ই-কমার্স শক্তিশালী প্লাটফর্ম’

চট্টগ্রামের মেলায় ৫০ উদ্যোক্তা দেড় শতাধিক স্টল

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২২ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান বলেছেন, ই-কমার্স আমাদের দেশে একটি নতুন ব্যবসা পদ্ধতি। এর অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা চাকরি খুঁজবো না। আমাদের ছেলেমেয়েরা যারা পাস করে বের হবেন তারা উদ্যোক্তা হয়ে অন্যকে চাকরি দিবে। আমি মনে করি, ই-কমার্স একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম। যেখানে যে কেউ যেকোনো অবস্থান থেকে নিজেকে দাঁড় করাতে পারে। গতকাল বেলা ১১টায় নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম ই-কমার্স ফ্যামিলির (সেফ) প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন হাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ই-কমার্সের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ অবস্থানে পা রাখছে, এটি অবশ্যই আনন্দের সংবাদ। ঢাকা থেকে আমরা ই-কমার্সের যে যাত্রাটি দেখি, তখন আমাদের ধারণা থাকে না দেশের আনাচে-কানাচে ই-কমার্সের বিস্তার হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সব সময় ব্যতিক্রম। ই-কমার্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে একজন উদ্যোক্তা বিশ্বের যেকোনো দেশে পণ্য কেনাবেচা করতে পারবেন। আমি মেলায় খেয়াল করেছি-নিজেদের মেধা কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তারা কিছু একটা করতে চায়। শুধু পণ্য নয়, অনেক ধরনের সেবা আছে, যা অনলাইনে সেল করা যায়। অতিরিক্ত সচিব বলেন, চট্টগ্রামের অনেক উদ্যোক্তা বিভিন্ন রকম ইনোভেটিভ পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। আমি আশা করি, উদ্যোক্তারা শুধুমাত্র ট্র্যাডিশনাল পণ্য নয়, নতুন নতুন পণ্য তৈরি করে এবং তা বিতরণের নতুন নতুন পন্থা আবিস্কার করবেন। যারা নতুন কিছু করতে চান, তাদের জন্য ই-কমার্স একটি ভালো প্লাটফর্ম।
চট্টগ্রামের ৫০ জন উদ্যোক্তার অংশগ্রহণে দেড় শতাধিক স্টল স্থান পেয়েছে মেলায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাবের পরিচালক (কমিউনিকেশন অ্যাফেয়ার্স) সৈয়দ রহমান, পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) আসিফ আনাফ, দারাজ’র রিজিওনাল কমার্শিয়াল মো. ইরফানুল করিম, ইনভেস্টমেন্ট কমিটি অব ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ফারাহ মাহমুদ তৃণা, রুহুল কুদ্দুস, ইএসডিপির ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর ভবসিন্ধু গায়েন, বারকোড গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মনজুরুল হক, অনেস্ট’র অ্যাডমিন বাদল সৈয়দ, সফল উদ্যোক্তা লোকমান হাকিম, তিলোত্তমা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদিন, ডি ইঞ্জিনিয়ারস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সৌমেন কানুনগো প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আয়োজকরা বলেন, ক্রেতাবান্ধব উদ্যোক্তা তৈরি করাই এই ফ্যামিলির মূল লক্ষ্য। প্রতিমাসে বিনামূল্যে ৪০ জন নতুন উদ্যোক্তাকে মাসব্যাপী ২৪টি ক্লাস এবং ৩৬টি টাস্কের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। যার মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৩শ জন উদ্যোক্তা প্রশিক্ষিত হয়েছেন। সেফ-এর আরও বিভিন্ন প্রকল্প আছে, যার মাধ্যমে হাতে-কলমে উদ্যোক্তাদের ব্যবসার কাজে সহায়তা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১শ নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হয়েছে, যারা নিজেদের এবং অন্যের কর্মসংস্থান করে চলেছেন।
ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ‘সেফ’ পরিচালনা করেন সাগর দে, সঞ্জয় চৌধুরী, তৌহিদুল ইসলাম, জহিরুল আলম তুহিনসহ ১৭ জন মডারেটর এবং ৬ জন টিম লিডার। এই আয়োজনের টাইটেল স্পন্সর দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেড।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন। কেবল বিক্রি করা নয়, নিজেদের পণ্যের গুণগতমানের জানান দিতেই মেলায় অংশ নিয়েছেন বলে জানান তারা। সুমাইয়া’স ড্রিমের সুমাইয়া জাহান মুমু মেলায় এসেছেন মজাদার ডেজার্ট ও পেস্ট্রি আইটেম নিয়ে। তিনি বলেন, আমি দুই বছর আগে এক প্রকার শখের বশে এই ব্যবসা শুরু করি। রেসপন্সও ভালো পাচ্ছি।
পাটশি’র স্বত্বাধিকারী জান্নাতুল সাইমা বলেন, ইনোভেটিভ চিন্তা থেকে আমি পাটের তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করছি। রেসপন্সও ভালো। পাটজাত বিভিন্ন লাইটিং আইটেম তৈরি করেছি। কিছু চুড়িও বানিয়েছি। সামনে জুয়েলারির বিভিন্ন আইটেম তৈরিরও পরিকল্পনা আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাস্ক, চকলেট নিয়ে মানুষের কাছে পুলিশ
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে ট্রাক চালকের রহস্যজনক মৃত্যু