ইসরায়েলি কয়েকজন সেনাকে বন্দি করার দাবি হামাসের

| সোমবার , ২৭ মে, ২০২৪ at ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় শনিবার লড়াইয়ের সময়ে কয়েকজন ইসরায়েলি সেনাকে বন্দি করার দাবি করেছে হামাস। তবে কত জন ইসরায়েলি সেনাকে তারা বন্দি করেছে বা তাদের দাবির পক্ষে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেডস এর মুখপাত্র আবু উবাইদা রোববার দাবি করেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। একটি রেকর্ড করা বার্তায় উবাইদা বলেন, আমাদের যোদ্ধারা ইহুদি বাহিনীর একটি দলকে সুড়ঙ্গের ভেতর অতর্কিত আক্রমণে প্রলুব্ধ করেছিল সুড়ঙ্গের ভেতর ইহুদি বাহিনীর সকল সদস্যকে মৃত, আহত এবং বন্দি করার পর যোদ্ধারা সেখান থেকে সরে আসে। রোববার ভোররাতে কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল জাজিরায় উবাইদার রেকর্ড করা ওই বার্তাটি প্রচার করা হয়। হামাসের সশস্ত্র শাখার এমন দাবি রোববারই অস্বীকার করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। খবর বিডিনিউজের।

সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীআইডিএফ নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে, গাজায় এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যেখানে একজন ইসরায়েলি সেনাকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে হামাস একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, রক্তাক্ত এক ব্যক্তিকে একটি সুড়ঙ্গের মেঝের উপর দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।। রয়টার্স স্বাধীনভাবে ওই ভিডিওর সত্যতা বা ওই ব্যক্তির পরিচয় বা তার অবস্থা এখন কেমন সে বিষয়ে কোন তথ্যই যাচাই করতে পারেনি।

গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা নতুন করে জোরাল হওয়ার খবর শনিবার প্রকাশের পর আবু উবাইদার রেকর্ড করা ওই বার্তা প্রকাশ পেল। যুদ্ধবিরতির আলোচনার বিষয়ে জানেন এমন একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ইসরায়েলের গোয়েন্দা বাহিনী মোসাদের প্রধান, যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ প্রধান এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী আগামী সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আগামী সপ্তাহে মধ্যস্থতাকারী, মিশর এবং কাতারের দেওয়া নতুন একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকবে।

গাজা যুদ্ধের আটমাস হতে চলেছে। কিন্তু এখনও এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। মধ্যস্থতাকারীদের বার বার চেষ্টার পরও কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হওয়া যাচ্ছে না। ইসরায়েল চায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি, বিনিময়ে হামাসের হাতে বন্দি সব জিম্মির মুক্তি। কিন্তু হামাস চায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধের অবসান এবং গাজা থেকে সব ইসরায়েলি সেনার প্রত্যাহার।

গাজা যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা এখন ৩৬ হাজার ছুঁই ছুঁই। গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ওই দিন শুধু ইসরায়েলকে নয় বরং পুরো বিশ্বকে হতবাক করে দিয়ে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১২শ মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। জিম্মি করে নিয়ে যায় আড়াইশর বেশি মানুষকে। জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকরা ছিলেন।

গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে শতাধিক জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়। কিন্তু এখনও বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি জিম্মি হামাসের হাতে বন্দি আছে। গত প্রায় আট মাসের যুদ্ধে কয়েকজন জিম্মি নিহত হয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতেল আবিবে বড় আকারে হামাসের রকেট হামলা
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ কার্যক্রমে সচেতনতা বাড়াতে পুলিশের উদ্যোগ