ইভ্যালি অবসায়ন করে দেনা পরিশোধের প্রস্তাব

| রবিবার , ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার শত শত কোটি টাকার পাওনা বুঝিয়ে দিতে না পারা ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালিকে কোম্পানি আইন অনুযায়ী অবসায়নের মাধ্যমে দেনা পরিশোধের প্রস্তাব করেছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি আয়োজিত ‘ই-কমার্স খাতের চ্যালেঞ্জ: সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এই প্রস্তাব আসে। খবর বিডিনিউজের।
বক্তারা বলেন, হাজারো অভিযোগের মুখে থাকা ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ঠেকাতে বিদ্যমান আইনই যথেষ্ট। প্রয়োজন শুধু সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা, সমন্বয় ও সক্ষমতা বাড়ানো।
ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম বলেন, আইনের অভাব নাই, নতুন আইনেরও দরকার নাই। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা যদি বাড়ানো যায় এবং সেই প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সততার সাথে কাজ করে তাহলে এ ধরনের অনিয়ম ঠেকানো যাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) যেসব আইন আছে, তা দিয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বিভিন্ন আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থাগুলো ‘পদে পদে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে’ মন্তব্য করে প্রতিযোগিতা কমিশন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উদাহরণ টানেন কর্পোরেট আইন বিশেষজ্ঞ তানজিব। তিনি বলেন, কোন কোন অবস্থায় প্রতিযোগিতা কমিশন পদক্ষেপ নেবে সেগুলো প্রতিযোগিতা আইনে বলা আছে। কিন্তু আমরা বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই, প্রতিযোগিতা কমিশনের যখন যেখানে তৎপর হওয়ার দরকার ছিল, তখন ওনারা বসেছিলেন, পদক্ষেপ নেন নাই।
তিনি বলেন, জনগণের করের টাকা সরকারের কাছে আমানত। একজনের লুটপাটের টাকা পরিশোধে আমি ট্যাঙ দিইনি- এটা সংবিধানবিরোধী। তাই এখন কোম্পানি আইন অনুযায়ী ওই কোম্পানিকে অবসায়ন করে যে অর্থ পাওয়া যায় তা দিয়ে পাওনা পরিশোধ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে যে লোকের ২০ হাজার টাকা পাওনা আছে তাকে এক হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব হলে, তাকে ওইটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই করের টাকায় এই পাওনা পরিশোধ করা যাবে না।
আলোচনায় ব্রাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আরএফ হোসাইন বলেন, ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জসহ বেশ কয়েকটি ই-কমার্স কোম্পানি দেশের অর্থনীতিতে অনেক বড় বিপদ সংকেত দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সবগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করেই এই খাত নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। ইভ্যালিসহ সম্প্রতি যা ঘটেছে তা সকল পক্ষের লোভের কারণেই হয়েছে। এখন জনগণের বিপুল পাওনা টাকা কোথায় আছে, তা খুঁজে বের করে যেটুকু পাওয়া যায়, তাই ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুবাই যাওয়া হলো না প্রবাসী ছৈয়দুলের
পরবর্তী নিবন্ধসংস্কার দাবিতে রাস্তায় মানুষ