ইভ্যালির এমডি ও তার স্ত্রী তিন দিনের রিমান্ডে

কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল রাসেলের : র‌্যাব

| শনিবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতারণার অভিযোগে গুলশান থানার মামলায় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাসরিনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার এ আদেশ দেন।
রাসেল ও তার স্ত্রীকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই ওহিদুল ইসলাম। রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকার মহানগর আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ এবং জে আর খান রবিন এর বিরোধিতা করে দুই আসামির জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নাকচ করে তিন দিনের হেফাজতে নিয়ে রাসেল ও শামীমাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। খবর বিডিনিউজের।
আরিফ বাকের নামে এক ব্যক্তি গত বৃহস্পতিবার ভোরে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন। পণ্যের জন্য আগাম অর্থ দিয়ে না পাওয়ার পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয় সেখানে। মামলার বাদী আরিফ বাকের তার অভিযোগে বলেন, ইভ্যালির বিজ্ঞাপন দেখে প্রভাবিত হয়ে তিনি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার পণ্যের অর্ডার দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে তাকে কোনো পণ্য সরবরাহ করা হয়নি।
পণ্যের ব্যাপারের ইভ্যালির অফিসে এবং পরে সিইও মো. রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। ওই মামলা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকালে মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রাতে র‌্যাব সদরদপ্তরে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শুক্রবার উত্তরায় র‌্যাব সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিপুল সংখ্যক গ্রাহক তৈরি করে ইভ্যালির ব্র্যান্ডভ্যালু বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল রাসেলের। সেই ব্র্যান্ডভ্যালু কাজে লাগিয়ে তিনি কোনো বিদেশি কোম্পানির কাছে দায়সহ ব্যবসা বেচে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন। তিনবছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায় চাপানোরও পরিকল্পনা ছিল তার। আর দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে মাত্র আড়াই বছরের মাথায় সরবরাহকারী কোম্পানি ও গ্রাহকদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়েছে ইভ্যালি। এত অল্প সময়ে এই বিপুল টাকা কোথায় গেল, তার হদিস এখনও মেলেনি। প্রতারণা ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে ইভ্যালি এমডি রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে এর আগেও কয়েকটি মামলা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়।
আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গত জুলাই মাসে দুদকের আবেদনে ইভ্যালির শীর্ষ কর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, একটি প্রতিবেদনে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দেনা ৪০৩ কোটি টাকা বলা হলেও তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তার এক হাজার কোটি টাকা দায় রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘুমধুমে যাচ্ছে না রেল
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশিদের ইংল্যান্ডে যাওয়ার পথ খুলছে