ইঁদুর নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

| শুক্রবার , ৬ নভেম্বর, ২০২০ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

ইঁদুর একটি অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রাণী। ছোট এই প্রাণীটির ক্ষতির ব্যাপকতা হিসাব করা খুবই কঠিন। যে কোন পরিবেশে, যে কোনো খাদ্য খেয়ে বাঁচতে পারে এটি। বাংলাদেশ বিভিন্ন অঞ্চলে ১৮ প্রজাতির ইঁদুর দেখা যায়। এদের বংশবৃদ্ধির হার অত্যধিক। সুষ্ঠু পরিবেশে এক জোড়া ইঁদুর থেকে বছরে ৩ হাজার ইঁদুর জন্মলাভ করা সম্ভব। প্রতি বারে ৬-৮টি পর্যন্ত বাচ্চা দিতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন কোন জায়গা খোঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে ইঁদুরের উপস্থিতি নাই। ফসলের মাঠ থেকে শুরু করে নালা-নর্দমা, ময়লার ডাস্টবিন, খাদ্য গুদাম, কারখানা, হোটেল-রেস্তোরাঁ, অফিস, দোকান, বাসাবাড়িতে সবখানে ইঁদুরের উপদ্রব আছে। দেশে প্রতি বছর ২ হাজার কোটি টাকার খাদ্যশস্য নষ্ট করে ইঁদুর। শুধু তাই নয়, দানাদার ফসল ছাড়াও ফলমূল, বইখাতা, আসবাবপত্র, কাপড়, বৈদ্যুতিক তার, যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা ক্ষতি সাধন করে। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্র -ইরি’র ২০১৩ সালের প্রতিবেদনে মতে, এশিয়ায় বছরে ইঁদুর ১৮ কোটি মানুষের একবছরের খাবারের সমান ধানচাল খেয়ে নষ্ট করে। শুধু বাংলাদেশে ৫০-৫৪ লাখ লোকের এক বছরের খাবার নষ্ট করে। ইঁদুরের মলমূত্র, লোম থেকে টাইফয়েড, জন্ডিস, চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়ায়। প্লেগ নামক রোগের অন্যতম বাহক হচ্ছে ইঁদুর। প্রতিবছর ইঁদুর দ্বারা আবাদি ফসলের একটি বড় অংশ নষ্ট হচ্ছে। ফলে আমাদের দেশে কৃষকরা ফসল বাঁচতে ইঁদুর নিধনে প্রচলিত পদ্ধতি ও বিষ প্রয়োগ করলেও কার্যকারীতা খুবই ক্ষণস্থায়ী। তাই বাংলাদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ইঁদুরের সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা সময়ে দাবি। ইঁদুর কমাতে প্যাঁচা, গুঁইসাপ, বেজি, শিয়াল, বিড়াল পরভোজী প্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে পাশাপাশি কৃষকদের ইঁদুর মারার আধুনিক যন্ত্র ও প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ইঁদুর নিধনে সরকারি-বেসরকারি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
মো.সাইমুন, শিক্ষার্থী, সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ার হোসেন : রূপালি পর্দার ‘মুকুটহীন নবাব’
পরবর্তী নিবন্ধপ্রেমের মধুর বার্তা ছড়িয়ে দেব