আ. লীগ ছাড়া দেশের বাকি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে

নগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে খসরু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৯ মার্চ, ২০২৩ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আওয়ামী সিন্ডিকেট ছাড়া কেউ ডলার পাচ্ছে না। এমনিতে তো ডলার সব খেয়ে ফেলছে। ১০ লাখ কোটি টাকার ডলার তারা বিদেশে পাচার করেছে। এখন ডলারের রিজার্ভ শূন্যের দিকে যাচ্ছে। যা আছে তা পাচ্ছে আওয়ামী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট বেশি দামে পণ্য মানুষের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। গতকাল শনিবার বিকেলে নগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহমদ সড়কের সামনে ‘আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ ও ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে’ কেন্দ্র ঘোষিত এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সহসংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে আমীর খসরু বলেন, আপনারা শুধু নেতাকর্মী নন। যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকরা যে প্রস্তুতি নেয় সেটি আপনারা শিখেছেন। আপনারা আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য সৈনিক হয়ে গেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে হুকুমের সঙ্গে সঙ্গে সৈনিকরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। শিগগিরই এ সরকারের পতন হবে এবং আমরা বাধ্য করব।

খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চোর, ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার চোরসহ যত উপাধি আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। এতো চোর, এতো চুরি বিশ্বের কোনো দেশে হয় না। দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। আওয়ামী চোর ব্যতীত সাধারণ মানুষের দুই বেলা খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। স্কুলের বেতন দিতে কষ্ট হচ্ছে, চিকিৎসার খরচ মেটাতে কষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের বাকি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় দুর্নীতি করেছে। যাদেরকে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমতি দিয়েছে, তারা সবাই আওয়ামী লীগের। এক্ষেত্রে কোনো টেন্ডার হয়নি। উৎপাদন না করেও কুইক চার্জের নামে ৯০ হাজার কোটি টাকা তারা সরকারের কোষাগার থেকে লুটপাট করে নিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো মামলা করতে না পারে, সেটার জন্য আইন করেছে। অর্থাৎ দুর্নীতি করার জন্য আইন করেছে তারা।

মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে পদক্ষেপ নিতে সরকারের ব্যর্থ হয়েছে। সরকার দুর্নীতি ও লুটপাটে ব্যস্ত। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে কোনো প্রকার প্রচেষ্টা নেই।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মসূচিতে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের আর পালাবার পথ নেই। এই সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। এরা জনগণের ভোট চুরি করেছে, চাল চুরি করেছে, তেল চুরি করেছে, জনগণের টাকা চুরি করেছে। বাংলাদেশ থেকে এখন ১২ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে এই সরকারের অধীনে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলতে হোল্ডিং ট্যাঙ বাড়ানো হয়েছে। সুরক্ষা পরিষদের উপর ছাত্রলীগের নেতারা হামলা চালিয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ অযাচিত হোল্ডিং ট্যাঙ দিবে না। হোল্ডিং ট্যাঙ বাড়ানো হলে বিএনপি আন্দোলনে নামবে। জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে।

এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, অবৈধ সংসদ ভেঙে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন দিতে হবে। আবুল হাশেম বক্কর বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আওয়ামী লীগের দখলে চলে গেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ সরকারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধে গড়ে তুলতে হবে। হারুন অর রশিদ বলেন, এ সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের সম্মান নষ্ট করেছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপহাসের পাত্র হিসেবে পরিণত করেছে। আবু সুফিয়ান বলেন, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম মেশিন কেন্দ্র থেকে বাইরে নিয়ে গেল যুবলীগ নেতা, দায়িত্বরত পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখল। এটাই প্রকৃত আওয়ামী লীগের চরিত্র। এদের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটনসহ নেতৃবৃন্দ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিয়ের দিন কনের বাড়িতে চুরি
পরবর্তী নিবন্ধওজনে কারচুপি, নেই মূল্যতালিকা নগরীর তিন মুরগি ব্যবসায়ীকে জরিমানা