আসছে আরো সোয়া লাখ টন পেঁয়াজ

বাজার নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ, ৫শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

পেঁয়াজের বাজার সামাল দিতে নতুন করে আরো এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৬ টন আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নিয়েছে ৪০ আমদানিকারক। গতকাল ২৬৪টি আইপির বিপরীতে এই আইপি সংগ্রহ করেন তারা। সবমিলিয়ে এপর্যন্ত ৮টি দেশ থেকে ৪৮১ আইপির বিপরীতে এক লাখ ৯৬ হাজার ২৮৬ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেয়া হয়েছে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের (প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন স্টেশন) উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল। অন্যদিকে পাইকারিতে পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে খুচরা বাজারে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৫ টাকা পর্যন্ত। এদিকে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্কহার প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের (প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টিন স্টেশন) উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল দৈনিক আজাদীকে বলেন, আজ (গতকাল) এপর্যন্ত সর্বোচ্চ আইপি নিয়েছেন আমদানিকারক। ২৬৪টি আইপির বিপরীতে মিয়ানমার, চীন, মিশর, পাকিস্তান, তুরস্ক, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৬ টন পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। এরমধ্যে চীন থেকে ১৭ হাজার ৩৬৫ টন, মিয়ানমার থেকে ১৯ হাজার ৯৫১ টন, পাকিস্তান থেকে ১৯ হাজার ৯৮৯ টন, মিশর থেকে ২৪ হাজার ৮৩৯ টন, তুরস্ক থেকে ৫ হাজার ৯২৬ টন, নেদারল্যান্ড থেকে ২৫ হাজার ৯৩৬ টন, নিউজিল্যান্ড থেকে ২ হাজার ৬২০ টন এবং মালয়েশিয়া থেকে ২৭০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে। আড়তদাররা জানান, আজ চাক্তাই খাতুনগঞ্জে ভারত ও মিয়ানমারের ট্রাক আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাজারে ক্রেতার সংকট রয়েছে।
হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, পেঁয়াজ আমদানির খবরে বাজারে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গত তিনদিন ধরে বাজার একরকম স্থিতিশীল রয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতীয় পেঁয়াজের শতাধিক ট্রাক দেশে প্রবেশ করেছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে এসব পেঁয়াজ চাক্তাই খাতুনগঞ্জে পৌঁছার কথা রয়েছে।
অপরদিকে কাজীর দেউরির খুচরা বাজারে গতকাল প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬৫ টাকায়। খুচরা বিক্রেতা মো. মিজানুর রহমান জানান, দাম বৃদ্ধির আতঙ্কে প্রথমদিকে মানুষ অতিরিক্ত পেঁয়াজ কিনেছে। এখন বেচাবিক্রিও কম। পাইকারি বিক্রেতারাও পেঁয়াজ ছাড়ছেন না। আমরা প্রয়োজন মতো দুই এক বস্তা পেঁয়াজ এনে বিক্রি করি।
এবিষয়ে ক্যাব চট্টগ্রামের সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, এবারও পেঁয়াজ বাজারের সেই সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার সাথে সাথে তারা দাম বাড়িয়ে দিলেন। অথচ এপর্যন্ত বাজারে যেসব পেঁয়াজ রয়েছে, সব আগে আমদানি করা।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করেছে এনবিআর। এনবিআরের দেয়া এ সুযোগ আগামী ২০২১ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। দেশে পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এসুযোগ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য, এরআগে গত ৭ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ আমদানির ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে নতুন শনাক্ত ২৫ জন
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্যের গাড়িচালকের শত কোটি টাকার সম্পদ : র‌্যাব