আমার স্বাধীনতা আমার পতাকা

নেছার আহমদ | বৃহস্পতিবার , ২৪ মার্চ, ২০২২ at ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ

লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ের বেদনা বিজড়িত বিজয়ের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধ। সমুদ্র-উপকুলের ক্ষুদ্র এক ভূখণ্ড যার পশ্চিমে ভারত, পূর্বে মিশেছে বার্মা সীমানায়, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, উত্তরে বহুদূরে অপার বিস্ময়ে দেখা যায় হিমালয় পর্বতমালা। দিগন্তবিস্তৃত ফসলের মাঠ, সবুজের মনভোলানো বিপুল সমারোহ, খাল-বিল, নদী-নালা আর সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের দেশ, সাথে রয়েছে ছবির মতো ছোট ছোট গ্রাম। মানুষের অতি সাধারণ সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় বিজড়িত জনপদ, নগর, বন্দর নিয়ে গড়ে উঠেছে যে দেশটি তার নাম ‘বাংলাদেশ’।
আমাদের প্রিয় জন্মভূমি দু’শো বছর নিষ্পেষিত হয়েছে বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের যাঁতাকলে। ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা ভারত উপমহাদেশকে বিভক্ত করে চলে যায়। পাকিস্তান নামে এক নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। হাজার মাইলের দূরত্বে অবস্থিত পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব-পাকিস্তান এক দেশের অংশ হলেও পূর্ব-পাকিস্তানের উপর ব্রিটিশদের মতোই শোষণ চালাতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তান। এমনি অব্যাহত শোষণ, অত্যাচার ও নিপীড়নের ফলে এ দেশের মানুষের মনে তীব্র বিক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে দিনের পর দিন। দু’দশকেরও অধিক সময় ধরে ধিকি ধিকি জ্বলে বিক্ষোভের আগুন। একদিন বিক্ষোভের সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের প্রচণ্ডতা আর দ্রুততায়। মুহূর্তেই নিশ্চিহ্ন করে দেয় অন্যায়ের, শাসন-শোষণের সমস্ত বাধা-বন্ধন। সে অসমযুদ্ধের নাম স্বাধীনতা যুদ্ধ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালে সংঘটিত তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়লে একটি জনযুদ্ধের আদলে গেরিলাযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে।
১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় বাঙালি জাতির জন্য এক সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দ্বার উম্মুক্ত করে। সদ্য স্বাধীন দেশের সমাজ, চাহিদা, আকঙ্ক্ষা ও প্রয়োজনের আলোকে নতুন সমাজের এক বৈপ্লবিক রূপান্তর সাধন ছিল ইতিহাসের দাবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত দক্ষ ও বিচক্ষতার সাথে সেই দাবি বাস্তবায়নে আমৃত্যু নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারী পাকিস্তান কারগার হতে বিজয়ের বেশে স্বদেশে ফেরত আসেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ফেরত এসে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে উপহার দিয়েছেন একটি আধুনিক ‘সংবিধান’। স্বাধীনতা সার্বভৌম একটি দেশের জন্য স্বাধীনতা অর্জনের সাথে সাথে কতগুলো মৌলিক বিষয় জরুরি হয়ে পড়ে। তৎমধ্যে একটি ‘সংবিধান’, যা অতি অল্প সময়ে প্রণয়ন করা হয়। ১৯৭২ এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম বিজয় দিবসের দিন হতে এ সংবিধান কার্যকরি হয়। সংবিধানের সাথে সাথে প্রয়োজন একটি জাতীয় পতাকার। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বাঙলার দামাল ছেলেরা নিজেদের তৈরি একটি জাতীয় পতাকাকে সামনে রেখে এক রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল।
সময়ের প্রয়োজনে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় জাতীয় পতাকার আধুনিকায়ন প্রয়োজন হয়ে পড়ে। একটি জাতির গৌরব ও মর্যদার প্রতীক ‘জাতীয় পতাকা’। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ সময়ে জাতির গৌরবময় ও মর্যদার প্রতীক জাতীয় পতাকার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এখানে তুলে ধরছি।
১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে যে পতাকাটি ব্যবহার হয়েছিল তা পরবর্তীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা ১৯৭২ অনুযায়ী যে জাতীয় পতাকা বর্তমানে আমরা ব্যবহার করছি তার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে যে পতাকা হাতে নিয়ে যে চেতনা নিয়ে জাতি যুদ্ধ করেছে, যে পতাকা হাতে নিয়ে বাংলার দামাল ছেলেরা মাঠে ময়দানে রণ হুঙ্কারের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ করে হানাদারদের কাছ হতে জয় ছিনিয়ে এনেছে এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছে। তারও রয়েছে এক দীর্ঘ ইতিহাস।
১৯৭০ এর ৭ জুন ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রদের একটি সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে এবং কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণের কর্মসূচী নেয়া হয়। কর্মসূচীকে সামনে রেখে পাকিস্তানী জান্তার বিরুদ্ধে শোডাউনের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা নেয়া হয় এবং ‘জয় বাংলা’ বাহিনী নামে একটি দল তৈরি করে কুচকাওয়াজের মহড়া দেয়া হয়। এর আগে সার্জেন্ট জহুরুল হকের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ‘জহুর বাহিনী’ গঠন করেন। এটি পরে ‘জয় বাংলা বাহিনী’ নামে পরিচিতি পায়।
অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করার জন্য সিদ্ধান্ত হয় ‘জয় বাংলা’ বাহিনীর একটি পতাকা তৈরী। পতাকাটির ডিজাইন হবে গাঢ় সবুজ জমিনের ঠিক মাঝখানে একটা লাল বৃত্ত। প্রস্তাবিত পতাকার জন্য প্রয়োজনীয় গাঢ় সবুজ আর লাল রঙের কাপড় মনিরুল ইসলাম ছাত্রলীগের নেতা রফিকুল ইসলামকে কাপড় জোগাড় করতে বললেন। রফিকুল ইসলাম ছাত্রলীগের মধ্যে ‘লিটল কমরেড’ নামে পরিচিত ছিলেন। রফিক জগন্নাথ কলেজের ছাত্র নজরুল ইসলামকে নিয়ে নবাবপুর চষে বেড়ান, কিন্তু কালচে সবুজ রঙের কাপড় কোথাও পেলেন না। নিউ মার্কেটের ‘অ্যাপোলো ফেব্রিকস’ এর মালিক লস্কর সাহেবের ছেলে ইকবাল ছিলেন রফিকের বন্ধু। ইকবালকে নিয়ে রফিক আর নজরুল নিউ মার্কেটে এসে, দোকান খুলে পছন্দের কাপড় পেয়ে গেলেন। কাপড় নিয়ে তাঁরা সোজা গেলেন বলাকা বিল্ডিংয়ের বলাকা সিনেমার হলের তিনতলায় ছাত্রলীগের অফিসের পাশে একটি দর্জির দোকানে। দোকানের নাম ‘পাক ফ্যাশন টেইলার্স’। দোকানের অবাঙালি দর্জি ‘মোহাম্মদ হোসেন, নাসির উল্লাহ ও আবদুল খালেক মোহাম্মদী পতাকাটি সেলাই করে দেন। সেলাই শেষ হলে তাঁরা চলে আসেন ইকবাল হলের ১১৬ নম্বর রুমে। এই কক্ষে থাকতেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ। এ কক্ষেই পতাকার ডিজাইন এবং তৈরি পতাকাটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কাজী আরেফ আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, আ স ম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ সহ ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন। পতাকাটির অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কারও অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। ছাত্রনেতা সিরাজুল আলম খান ইকবাল হলের তিনতলার একটি কক্ষে প্রায়ই থাকতেন। তাঁকে সেখানেই পাওয়া গেল। সবকিছু শুনে তিনি বললেন, ‘যে নাম দিয়েই পতাকা প্রদর্শন করো না কেন, তাকে ভবিষ্যতের স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা হিসেবেই মনে করা হবে। এটা নিয়ে প্রতিপক্ষের অপপ্রচার হবে। পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনকে অনেকেই যুক্ত বাংলার কথা বলে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের বিরুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে। অনেক আলোচনার পর তিনি লাল বৃত্তের মাঝখানে বাংলাদেশের একটা মানচিত্র এঁকে দেওয়ার পরামর্শ দেন। সোনার বাংলার প্রতীক হিসেবে মানচিত্রের রং যেন সোনালি হয় এই ছিল তাঁর মত। তাঁর মতামতের প্রেক্ষিতে একজন শিল্পীর দরকার হলো মানচিত্র আঁকার জন্য। সলিমুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষে ব্যানার ফেস্টুন আঁকার জন্য কুমিল্লা ছাত্রলীগের নেতা ‘শিবনারায়ণ দাস’ তখন সেখানে অবস্থান করছিলেন। মনিরুল ইসলামের নির্দেশে বাংলা বিভাগের ছাত্র ফজলুর রহমান বাবুল সলিমুল্লাহ হল হতে সুমন মাহমুদের রুম থেকে শিবনারায়ণকে নিয়ে আসলেন মানচিত্র আঁকার জন্য কিন্তু রং তুলি কই? কামরুল আলম খান খসরু ছুটলেন নিউ মার্কেটে। কাঁচাবাজারের মধ্যে একটা রঙের দোকান ছিল। দোকানের ভেতরে দোকানি ঘুমিয়ে ছিলেন। খসরু তাঁকে ডেকে তুলে রং নিয়ে আসলেন। সেই রং দিয়ে আঁকা হলো বাংলাদেশের মানচিত্র।
‘৭ জুন সকালে বৃষ্টি ছিল। পল্টনে জয় বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ হলো। সবার সামনে আ স ম আব্দুর রব। তিনি জয় বাংলা বাহিনীর প্রধান। তাঁর পেছনেই বাহিনীর উপপ্রধান খসরু। রব একটা কাটিতে প্যাঁচানো পতাকাটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে তুলে দিলেন। কুচকাওয়াজ থেকে সামরিক কায়দায় তাঁকে সালাম জানানো হলো, শেখ মুজিব কপালের কাছে হাত তুলে সালামের জবাব দিলেন। শেখ মুজিব পতাকাটা খুলে একটু দেখলেন, তারপর পাশে দাঁড়ানো একজনের হাতে সেটা দিয়ে দিলেন’।
১৯৭১ এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রনেতা আ স ম আব্দুর রব বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা প্রকাশ্যে উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ পতাকাটি ১৯৭১ মার্চ ২৩ তারিখে তাঁর বাসভবনে প্রকাশ্যে উত্তোলন করেন। সবুজ ও লাল বৃত্তের মাঝে সোনালী রঙের বাংলার মানচিত্রে চিহ্নিত ছাত্রনেতা ‘শিবনারায়ণ দাশ’ এর ডিজাইনকৃত বা নকশাকৃত পতাকাটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধের বা মুক্তিসংগ্রামের পতাকা। এ পতাকা হাতেই বাংলার দামাল ছেলেরা, সৈনিকরা, কৃষকেরা, আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলে সামনে রেখে প্রাণপনে যুদ্ধ করে বাংলার বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। ১৭ এপ্রিল অস্থায়ী সরকার শপথানুষ্ঠানেও এ পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ পতাকা সামনে পাকিস্তানী হানাদাররা আত্মসমর্পণ করে।
স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত পতাকার উপর যে মানচিত্র ছিল তা বিভিন্ন সময় বিকৃত হয়ে পড়ে বা এদিক ওদিক ভুল হয়। সে কারণে জাতীয় পতাকাকে সহজ করার জন্য পরবর্তীতে মানচিত্রটি বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ‘শিবনারায়ণ দাশের’ ডিজাইনকৃত পতাকার মাঝে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পাতাকার মাপ, রং ও তার ব্যাখ্যা সংবলিত একটি প্রতিবেদন তৈরী করা হয়। পটুয়া কামরুল হাসানকে দিয়ে নতুনভাবে জাতীয় পতাকার ডিজাইন করা হয়। পটুয়া কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটি বর্তমানে আমাদের জাতীয় পতাকা।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পতাকা বিধিমালায় এর সুনির্দিষ্ট মাপ ব্যবহারের নিয়মাবলী উল্লেখ রয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ সময়ে জাতি আজ বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল। আজ আমরা গর্বের সাথে আমাদের স্বাধীনতা ও আমাদের জাতীয় পতাকার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে জাতীয় চেতনায় বাঙালিত্বের ও দেশপ্রেমের বোধে উজ্জীবিত। জয় হোক স্বাধীনতার, জয় হোক জাতীয় পতাকার।
সূত্র : ১। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ ২। মহিউদ্দিন আহমদ লিখিত ‘জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি, প্রথমা প্রকাশন। ৩। মুনতাসির মামুন সম্পাদিত, ‘কিশোর মুক্তিযুদ্ধ/ কোষ’। ৪। আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, হুমায়ুন আজাদ। ৫। মহিউদ্দিন আহমদ সম্পাদিত (২০০৬) ‘আমাদের একাত্তর’ গণ উন্নয়ন গ্রন্থাগার ঢাকা।
লেখক : প্রাবন্ধিক, সম্পাদক- শিল্পশৈলী

পূর্ববর্তী নিবন্ধটিসিবির পণ্য হোক সবার জন্য
পরবর্তী নিবন্ধকাল আজকাল