আমাকে ভুলে যাবার প্রতিযোগিতা

জাইদুল ইসলাম দুর্লভ | বুধবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৪ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

আমাকে ভুলে গেছে একুশের বইমেলা।

ভুলে গেছে কবিতার বই, ছড়ার পাণ্ডুলিপি,

গল্পের রাফখাতা। ভুলে গেছে ছড়াকার, গল্পকার,

কবিসাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী।

ভুলে যাচ্ছে পত্রিকা পাড়া, শিশুসাহিত্যের আসর,

পলাশের আড্ড। শঙ্খ পারের ডিঙি নৌকা।

আমাকে ভুলে যাচ্ছে শিল্পকলা, মঞ্চ নাটক,

বোধনের বসন্ত উৎসব, মুক্ত মঞ্চে দলীয় আবৃত্তি

ভুলে যাচ্ছে শাটল ট্রেনের পুরোনো বগি।

আমাকে ভুলে যাবার তুমুল প্রস্তুতি যেন চলছে

ঘর সংসার গেরস্থালীতে।

ভুলে যাবার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পাহাড় নদী সমুদ্র

মেঘ বৃষ্টি ঝড়, বিকেলের নরোম আকাশ,

দুপুরের গান শোনা, সন্ধ্যার আড্ডা, রাত জাগার ছুঁতো।

আমাকে ভুলে যাচ্ছে প্রেসক্লাব, বারকোডের দোসা,

মেরিন টাইমের শিক কাবাব, জামালখানের লুচি আলুর দম,

সিআরবির সাত রাস্তার মোড়,

মায়ের মতো আদর করে গালে চুমু খাওয়া

কমলের শাশুড়ি আমাকে কি ভুলে গেছে?

আমাকে ভুলে যাচ্ছে সময়ের স্কুল,

শব্দের ঘুম পাড়ানি ছড়াগল্প।

সময়ের আম্মুর বাজারের ব্যাগ।

আমাকে ভুলে গেছে বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে

শহরে বিরহ জমাবে প্রিয় প্রেমিকা।

লালদিঘিতে বিচ্ছেদ সমাবেশের ডাক দিবে,

বিরহ মেলার আয়োজন হবে লালদিঘির মাঠে।

আমাকে ভুলে যাবার সম্মিলিত এই প্রতিযোগিতায়

আমাকে ভুলে যাওয়াটা ভীষণ কঠিন জেনেও

আমাকে ভুলে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছে কেউ একজন।

কেউ জানেকেউ হয়তো জানে না

তাঁরা আমাকে ভুলে যাবার অনেক আগে

আমিই আমাকে ভুলে গেছি যত্ন করে।

আমার কথা আমার কিছুই মনে পড়ে না আর

এক ছুটিকে ছাড়া।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅশ্রুসিক্তের সৌভাগ্য
পরবর্তী নিবন্ধসব দিও, কথার আঘাত নয়