আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চাই : তথ্যমন্ত্রী

| সোমবার , ৫ জুন, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন নয়, সরকার দেশটির সঙ্গে ‘আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ চায় বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের উত্তরে তার এ বক্তব্য আসে।

শনিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে ও নিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নাই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে; সেই মহাদেশের সঙ্গে আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব; আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, উন্নত হবে, আরও চাঙ্গা হবে।

সেই প্রসঙ্গ ধরে গতকাল এক সাংবাদিক তথ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইছে কিনা। উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, অবশ্যই নয়। আমাদের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করতে চাই। এবং সেই কারণে আপনারা দেখেছেন সাম্প্রতিক সময়ে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক যাতে আরো ঘনিষ্ঠ হয় সেজন্য পররাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিষয়ে অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চাই। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, একইসাথে আমরা অন্যান্য দেশ, যেমন দক্ষিণ আমেরিকা এখনো…, সেখানে আমরা বাণিজ্য খুব একটা বাড়াতে পারিনি, সেখানে আমরা বাড়াতে চাই। আমরা মাধ্যপ্রাচ্যে শুধুমাত্র শ্রমিক রপ্তানি করে থাকি। মধ্যপ্রাচ্যে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, ফ্যাশন সচেতনতা বেড়েছে। সেখানেও আমাদের বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা প্রচুর। সেখানেও আমরা বাণিজ্য বাড়াতে চাই। ওশেনিয়া অঞ্চলে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা প্রচুর; সেখানেও আমরা বাড়াতে চাই। প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। আর মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে টেনশনে আছে তাদের টেনশন কমানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেছেন।

বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের লাফালাফি কমে গেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সব সময় বক্তব্য রাখার সময় মাঝেমধ্যে কয়েক সেন্টিমিটার লাফ দেন। এটা হয়তো উনার অভ্যাস, হতেই পারে। বিভিন্নজন বক্তৃতা করার সময় লাফ দেন, এটা হয়তো উনার অভ্যাস, দোষের কিছু নয়। তিনি (ফখরুল) বলেছেন, আজরাইল নাকি সরকারের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। বেশি কথা বলে লাভ নেই। আজরাইল উনাদের পেছনেও আছে, আজরাইলের সাথে উনাদের সাথে শয়তানও আছে। এজন্য আজরাইল ওদের তাড়াতাড়ি ধরবে। পার্থক্যটা হচ্ছে সেখানে। কারণ উনি যে বিষয়কে ইঙ্গিত করে বলেছেন, সেটি যদি আজরাইল হয়, তাহলে সেই আজরাইল উনাদের অনেক বেশি কাছাকাছি আছে। আর আজরাইলের সঙ্গে উনাদের সাথে শয়তান বহু আগে থেকেই আছে। সুতরাং যার সাথে শয়তান থাকে, আজরাইল কিন্তু তার কাছে আগে পৌঁছায়।

বিএনপি মহাসচিব এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে ‘আত্মতুষ্টি পেতে চাইলেও লাভ হবে না’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আপনাদের তত্ত্ববাধায়ক সরকারের দাবি মাঠে মারা গেছে এবং সারা দুনিয়ার কোনো জায়গা থেকে সমর্থন পায়নি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা বিভিন্ন সময় আগুন সন্ত্রাস করেছে, তাদের পাশাপাশি তাদের হুকুমদাতা ও অর্থদাতাদের তালিকা করা হচ্ছে। এসব তালিকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হবে। অনেকেই এই তালিকা চেয়েছেন।

বাজেট না পড়েই অনেকে এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান, যারা পেশাদার সমালোচক এবং রাজনৈতিক সমালোচকরা একটি কথা বলেছেন, এটি একটি ঘটতি বাজেট। পেশাদার সমালোচকরা একটু খোঁজখবর নিয়ে বললে ভালো হতো। পেশাদার সমালোচকরা সমালোচনা করার আগে গবষেণা করেন, এটা তাদের বক্তব্য। তবে কতটুকু গবেষণা হয় সেটা আমি জানি না। তারা যখন বলেন ঘাটতি বাজেট, তখন তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের ডিজিপির অনুপাতে ৫.২ শতাংশ ঘাটতি। ভারতে ৫.৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৫.৫ শতাংশ ঘাটতি। পৃথিবীর ১০০ থেকে ১২০টি দেশ বাজেট দেয়। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের তুলনায় আমাদের ঘাটতি কিন্তু কম।

রাজনৈতিক সমালোচকরা বাজেট না পড়েই বক্তব্য দিয়েছেন দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, এই বাজেটকে জনববান্ধব ও গরিববান্ধব এজন্যই বলেছি, সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি উপকারভোগীর সংখ্যা ও বিভিন্ন ভাতাধারীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর কথা হয়েছে। সরাসরি দুই কোটি মানুষ সরকারের কাছ থেকে নানাভাবে অর্থসহ নানা সহায়তা পাবে। তাহলে কি এটি গরিববান্ধব বাজেট নয়?

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরের জন্য বরাদ্দ চার হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আইনমন্ত্রীর বক্তব্য ‘শব্দ চয়নে ভুল’