আজ দৈনিক আজাদীর জন্মদিন

এস এম সালাহ্‌উদ্দিন সামির | শুক্রবার , ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

৬২ শেষ করে ৬৩ পা দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক আজাদী। চট্টগ্রামের পত্রিকা হলেও কিন্তু বিশ্বময় তার পাঠক। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের চমৎকার মেলবন্ধনের সমন্বয় এই পত্রিকা। ১৯৬০ সালের এ দিনে আত্মপ্রকাশ ঘটে আজাদী’র। ইতিহাস পর্যালোচনায় জানি স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৭ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা থেকে কোনো পত্রিকা প্রকাশিত না হলেও দৈনিক আজাদী প্রকাশিত হয়। সেদিন পত্রিকার শিরোনাম ছিল ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে যে পত্রিকাটি সেই ৬২ বছর আগ হতে কাজ করতে করতে সমৃদ্ধ হয়েছেন এদেশের গণ মানুষের দর্পণ হয়ে স্বাধীন দলিল হিসেবে, ভাষা, কৃষ্টি সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য চট্টগ্রামের প্রতিটা অঞ্চলে যার ছাপ বিদ্যমান, বীর চট্টগ্রামের অদম্য প্রতিনিধি হয়ে যেন জয় করে নিয়েছেন দলমত নির্বিশেষে সকলের আস্থার প্রিয় দৈনিক হিসেবে সবার শীর্ষে গণমানুষের লালিত ভালোবাসা, না কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়, কারো প্রতি অশ্রদ্ধা নয়, অসম্মান নয়, জনে জনে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশের অদম্য উচ্ছ্বাস যেন প্রিয় দৈনিক আজাদী।
কেউ কথা না রাখলেও আজাদী কথা রেখেছে বরাবর। চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের কথা বলা, এ অঞ্চলের স্বপ্ন ও সম্ভাবনা তুলে ধরা এবং যাবতীয় বঞ্চনা, অবহেলা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। সুদীর্ঘ এ পথ চলায় আজাদী সত্যনিষ্ঠা, সাহস ও আন্তরিকতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করেছে। ভবিষ্যৎ পথচলায়ও আজাদী এ ধারা অব্যাহত রাখবে বলে দৃঢ় চিত্তে বিশ্বাস করি।
আজ আজাদীর জন্মদিনে আমার সরল স্বীকারোক্তি আজাদী পত্রিকাটির জন্য পাগলামি করিনি এমন কোনো দিন নেই, যেন তার জন্য ভালোবাসা তার জন্য প্রেম, আমার এমনও দিন গেছে, আজাদীর জন্য হকারদের অপেক্ষায় পাড়ায় পাড়ায় ছুটতাম, বাসায় ভোরে ঘুমের ঘোরে পত্রিকা খুঁজে বেড়াতাম, টেবিলে না থাকলে যেন মনে করতাম মনে হতো পত্রিকা হকার ভুল করে আমাদের এলাকায় আজকে আসিনি, নাকি হকার অসুস্থ, নাকি দেরী করে বের হলো, নাকি আজ আজাদীর ছুটির দিন, এটা সেটা ভাবতাম, শেষ পর্যন্ত খুঁজে না পেলে ও পাঁচ টাকার আজাদীর জন্য ৭০/৮০ টাকা রিকশা ভাড়া করেও দেওয়ান হাট হতে চেরাগী মোড় ওসমান গণি ভাইয়ের সেই বিখ্যাত দোকানে চলে আসতাম, পত্রিকা নিতাম, পাশের দেয়ালে শোভা পেত আজাদীর মিলনমেলা, চোখ বুলাতাম, যেই না আজাদী পেতাম বাসায় এনে টেবিলে রাখতে রাখতে শুরু হয়ে যেত এর অপারেশন মানে কেউ আজাদীর রম্য কৌতুক কেটে নিয়ে রাখতো, কেউ খেলার খবর, কেউ সংস্কৃতি, এটা সেটা, তবে যার যেটাই হোক আমার বরাবরই কলাম পছন্দ, কবিতা গল্পো, আর নিত্য ঘটে যাওয়া সংবাদের প্রতি প্রবোল আগ্রহ। দিনশেষে পত্রিকাটি দেখতাম পোস্ট মর্টেমর জন্য নির্ধারিত হয়ে গেছে, তবে আর যাই হোক এটা হচ্ছে আমার দৃষ্টিতে আজাদীকে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন রঙে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
তবে আর যাই হোক আজাদী আমাকে লেখক বানিয়েছে, মনের আঁকিবুঁকি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে লেখা, জনগণের জন সমস্যার জন্য লেখা, এমনকি দৈনিক আজাদীর অনন্য ফিচার ফেসবুকে সুখে দুখে আমার নিত্য লেখা, এ ব্যাপারে সমান কৃতজ্ঞতা আমার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিনন্দন আজাদী
পরবর্তী নিবন্ধআজাদীর জন্মদিন