সবজি চাষে মীরসরাই উপজেলা চট্টগ্রামের অন্যতম সেরা জনপদ। এবার আগাম চাষ করতে না পারলেও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। স্থানীয় ফুলকপি ওঠার আগে উত্তরাঞ্চলের সবজি বাজারে চলে আসায় দাম কিছুটা কম পেলেও কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা এবার ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে ফুলকপি বিক্রি করেছেন। গেল বর্ষা বিলম্বিত হওয়ায় অনেকে আগাম চাষ করতে পারেনি। তাই আগাম চাষে বেশি লাভবান হতে পারেননি কৃষকরা।
এবার পৌষ মাস পেরিয়ে শেষের দিকেই ঝকঝকে ফুলকপির আলোয় আলোকিত যেন কৃষকদের মুখ। গত বছরের তুলনায় জমি উর্বর থাকায় এবার প্রায় সব ধরনের সবজিরই ভালো ফলন হয়েছে। এবারের ভরা মৌসুমে প্রতিটি কপি পাইকারি দরে ২৫ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করছেন। অথচ গেল কয়েক বছরও এই মৌসুমে কখনো অনেক কমে বিক্রি করতে হয়েছে প্রতিটি কপি। গতকাল শুক্রবার আমবাড়িয়া গ্রামের ফুলকপি চাষি প্রদীপ দাস বলেন, এবার ২০ গন্ডা জমিতে শুরুতেই পুঁজির ৫০ হাজার টাকা উঠে গেছে। এখন আরও লাখ টাকা লাভের টার্গেটে আছি। খরচ গিয়ে অন্তত এই মাসে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে। ছোটবড় সব চাষিই কমবেশি লাভবান এবার। কারণ বাজারে সবজির ভাল দাম রয়েছে এবার। আরেক কৃষক জাহাঙ্গীর ভূঞা বলেন, আগের বছরগুলোতে দেখা গেছে বাজারে একটি কপি বিক্রি হতো ৪০–৫০ টাকা। কিন্তু কৃষকের কাছ থেকে প্রতি ফুলকপি হিসেবে কিনতো। এবার কৃষকরাই কেজি হিসেবে পাইকারি বিক্রি করছে। তাই দামে আর ঠকানোর সুযোগ থাকলো না।
নিজের ফুলকপি ক্ষেতে ৫ শ্রমিক নিয়ে ব্যস্ত খৈয়াছরা গ্রামের কৃষক মো. মুছা (৫২)। ফলন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বললেন, গেল বছর ও আগাম চাষ করতে গিয়ে বৃষ্টিতে ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দুইবার রোপণ করতে হয়েছে চারা। পুরো জমিতে ৭০ হাজার টাকা লস হয়েছে। এবার লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে গতবারের ক্ষতিও পুষিয়ে যাবে। কৃষক মুছা মিয়া আরও বলেন, একটি হিমাগার থাকলে কৃষিপণ্য সংরক্ষণে অনেক সুবিধা পাওয়া যেত। মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম জানান, এবার উপজেলায় প্রায় ৬৫ হেক্টর ফুলকপি ও ৬০ হেক্টর বাঁধাকপি চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া শিম, টমেটো, লাউ, আলুও চাষাবাদ হয়েছে বেশ। কৃষকরা লাভবান বলে আনন্দিত কৃষি বিভাগও।