আইন ও চট্টগ্রামবাসীর সেন্টিমেন্টের বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না : রেলমন্ত্রী

সিআরবি প্রকল্প স্থানান্তর প্রয়োজন : তথ্যমন্ত্রী ।। দুই মন্ত্রীর সাথে নাগরিক সমাজের মতবিনিময়

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামবাসী না চাইলে সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। গতকাল সোমবার দুপুরে রেল ভবনে নাগরিক সমাজ-চটগ্রামের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ ঘোষণা দেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, এখানে হাসপাতাল করতে হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ থেকে নকশা অনুমোদন করতে হবে। সিডিএ যদি নকশা না দেয় সেখানে হাসপাতাল হবে কী করে। আর অন্যান্য সংস্থার অনুমোদনে আইনী বাধা থাকলে সেখানে কোনো কিছু করা সম্ভব না। সবচেয়ে বড় কথা চট্টগ্রামবাসী না চাইলে সেখানে হাসপাতাল প্রকল্প হবে না। তিনি বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্প রেল মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি। এটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পিপিপি অথরিটির প্রকল্প। বিনিয়োগও বেসরকারি। সুতরাং রেল মন্ত্রণালয়ের এখানে করার কিছু নেই। নাগরিক সমাজের দেয়া যাবতীয় তথ্য উপাত্ত আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরবো, তিনিই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে আমার অভিমত, আইন ও চট্টগ্রামবাসীর সেন্টিমেন্টের বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না। আমরা যা কিছু করছি জনগণের কল্যাণে। জনগণের কল্যাণে সরকার প্রকল্প গ্রহণ করে।
মতবিনিময়ের পর নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের প্রতিনিধি দল তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরাও নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের দাবির সাথে একমত। চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে সিআরবি থেকে প্রকল্পটি অন্যত্র স্থানান্তর করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এখানে শহীদের কবর রয়েছে, এটি হেরিটেজ জোন, চাইলে অন্য জায়গায় হাসপাতাল করতে পারে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে অবগত করবো।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমার শৈশব, কৈশোর কেটেছে চট্টগ্রামে। সিআরবির নান্দনিক এবং নৈসর্গিক পরিবেশ আমিও উপভোগ করেছি। এ পরিবেশ ধ্বংস হলে নান্দনিকতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আমিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরবো।
মতবিনিময়কালে মন্ত্রীর কাছে প্রকল্পের যাবতীয় অসঙ্গতি তুলে ধরে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রামের সদস্য সচিব মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল।
এ সময় তিনি মন্ত্রীকে বলেন, সিআরবি হচ্ছে ২০০৯ সালের গেজেট অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত সরকার ঘোষিত হেরিটেজ জোন। এখানে কোনো ধরণের বাণিজ্যিক স্থাপনা হতে পারে না। আইনতঃ নিষিদ্ধ। তাছাড়া এটি চট্টগ্রামের ফুসফুস এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু।
ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল আরও বলেন, চাকসু জিএস শহীদ আবদুর রব, শহীদ মনোয়ার, শহীদ শেখ নজিরসহ ৯ শহীদের কবর এই সিআরবিতে। এখানে কোনো স্থাপনা হলে শহীদের কবর ধ্বংস হবে।
তিনি বলেন, আমরা হাসপাতালের বিপক্ষে নই। হাসপাতাল চাই। তবে সিআরবিতে নয়। সিআরবি ছাড়া অন্যত্র হাসপাতাল হলে আমরা স্বাগত জানাবো।
এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রামের কো- চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস, জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন, চবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, নাগরিক সমাজ-চট্টগ্রামের যুগ্ম সদস্য সচিব ও বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী রাশেদ হাসান, প্রণব চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রাশেদুল ইসলাম, অনির্বাণ দত্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকিবের শারীরিক অবস্থার আরো উন্নতি
পরবর্তী নিবন্ধকার্বন নিঃসরণ কতটা কমাবেন বলুন