অমাবস্যা তিথির অপেক্ষায় হালদার ডিম সংগ্রহকারীরা

রাউজান প্রতিনিধি | সোমবার , ৫ জুন, ২০২৩ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

মুষলধারে টানা বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়ার অপেক্ষায় হালদা নদীতে নৌকা নৌঙ্গর করে আছেন মাছের ডিম সংগ্রহকারীরা। আগামী ১০ জুন একটি ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্ভাবাস রয়েছে। আবহাওয়াবিদদের দেয়া এ পূর্ভাবাস সঠিক হলে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই পূর্ণিমার তিথিতে হালদার মা মাছ ডিম দেয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে আগামী ১৭ থেকে ২০ জুনের মধ্যে হালদার মা মাছ ডিম দিতে পারে। ওই সময়েও মাছ ডিম না ছাড়লে ২০১৬ সালের মত খালি হাতে ডিম সংগ্রহকারীদের নদী থেকে উঠতে হবে।

হালদা গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেছেন, বর্তমানে হালদার গভীরতা আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। নদীর নিচের স্তরে পলি জমেছে। সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপে নদীর পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় মা মাছ নিজেদের নিরাপত্তায় গভীর মিঠা পানির সন্ধানে শঙ্খ, মাতামূহুরী, কর্ণফুলীর মত নদীতে আশ্রয় নেবে। তিনি বলেন, বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় পানি শীতল হলে মা মাছ আবার হালদায় ফিরবে।

এই বিশেষজ্ঞ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রাকৃতিক এই মৎস্য ভাণ্ডারকে প্রাকৃতিকভাবে টিকিয়ে রাখার কৌশল নেয়া উচিত ছিল। কতিপয় গোষ্ঠীর নানামুখি পরামর্শে হালদাকে বহু আগে ধ্বংস করা হয়েছে। হালদার গতিপ্রকৃতি না বুঝে নেয়া ভুল পরিকল্পনায় আজ হালদা এই অবস্থায় এসে ঠেকেছে। ড. আজাদী হালদা নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ অল্প কিছুদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। চবি অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরীয়ার মতে, আগামী ১০ জুন ঘুর্ণিঝড়ের পূর্ভাবাস রয়েছে। এ ধরনের আবহাওয়ায় মা মাছ ডিম দেয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এর প্রভাব কমে গেলে আগামী ১৭২০ জুনের মধ্যে মা মাছ ডিম ছাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। এই সময়েও ডিম না দিলে ২০১৬ সালের মত খালি হাতে ডিম সংগ্রহকারীদের নদী থেকে উঠে যেতে হবে।

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত মাসের শেষের দিকে নদীর পানিতে যেই মাত্রায় লবণাক্ততা ছিল তা এখন নেই। এখন নদীর পানির তাপমাত্রা বেশি থাকায় মা মাছ অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে। এখন অপেক্ষা করতে হবে পর্যাপ্ত ঝড় বৃষ্টির জন্য। আগামী অমাবস্যার তিথিতে মাছের ডিম দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সকল ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের দাবি
পরবর্তী নিবন্ধকুতুবদিয়ায় পুকুরে ডুবে ১ শিশুর মৃত্যু, ২ শিশু হাসপাতালে ভর্তি