অবৈধ সুবিধা নিতে না পেরেই মামলা করেছিলেন চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কেজিডিসিএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপকের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৭ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ

চাকরিচ্যুত দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন কোনোভাবেই সৎ ছিলেন না। অবৈধ সুবিধা নিতে না পেরে মামলা করেছিলেন। এসব কারণেই তাকে চাকরি হারাতে হয়। অথচ বর্তমানে তিনি নিজেকে সৎ দাবি করে আসছেন।
গতকাল কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) চট্টগ্রামের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. সারওয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন। নগরীর প্রেস ক্লাবের
এস রহমান হলে কেজিডিসিএল চট্টগ্রামের সার্ভেয়ার দিদারুল আলম ও আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।
২০২১ সালের ১০ জুন কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক থাকাকালীন মো. সারওয়ার হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানটির পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন দুদক কর্মকর্তা শরীফ। মামলায় অবৈধভাবে ১২টি গ্যাসের দ্বৈত চুলা হালিশহর থানা এলাকা থেকে চান্দগাঁও থানা এলাকায় স্থানান্তরের অভিযোগ আনা হয়। উক্ত মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২ মাস ৭ দিন কারাগারে থেকে একই বছরের ১৭ আগস্ট জামিনে মুক্তি পান সারওয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই হালিশহর থেকে চান্দগাঁও এলাকায় ১২টি গ্যাসের দ্বৈত চুলার সংযোগ স্থানাস্তর করা হয়। গ্রাহকও উক্ত ১২টি চুলার মাসিক গ্যাস বিল নিয়মিত পরিশোধ করে আসছে। এতে কেজিডিসিএল কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে মামলাটি করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় শ্বাশুড়ির নামে ৮টি দ্বৈত চুলার সংযোগ স্থানান্তর করান চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ। পরে উক্ত ৮টি গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে উক্ত মামলাটি করেন। দুদক কর্মকর্তা শরীফের অসংখ্য অপকর্ম রয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, শরীফ তার ভাই শিহাব উদ্দিনকে কেজিডিসিএলে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। শিহাবের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদ ছিল ভুয়া। শিহাবের চাকরি স্থায়ী করার জন্য কেজিডিসিএলের কর্মকর্তাদের চাপ দিতেন শরীফ। তিনি তার এক খালাতো ভাইকে কেজিডিসিএলে গাড়িচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। কঙবাজারের বেলায়েত হোসেন নামের এক দালালের মাধ্যমে শরীফ ঘুষ নিতেন। শরীফের সম্পদ যাচাই-বাছাই করলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। বৈধ পথেই তিনি সম্পদ অর্জন করেছেন। তারপরও স্ত্রীসহ তাকে আসামি করে মামলা করেন দুদক কর্মকর্তা শরীফ। নগরের ২ নম্বর গেট এলাকার দুটি দোকান তার কাছে চেয়েছিলেন শরীফ। তা না দেওয়ায় শরীফ উক্ত মামলাটি করেছেন।
এক ব্যক্তির গ্যাসের চুলা কীভাবে অন্য ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হলো, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সারওয়ারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে দুদক তা অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পেলে মামলার অনুমোদন দেয় সংস্থাটি। সেই হিসেবে যারা মামলা করতে অনুমোদন দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে শুধু শরীফের বিরুদ্ধে কেন সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে?
এর জবাবে সারওয়ারসহ অন্যরা বলেন, শরীফই সব করেছেন। সারওয়ার বলেন, শরীফ তাকে জড়িয়ে কেজিডিসিএল সম্পর্কে মিথ্যাচার করে চলেছেন। নিজের দুর্নীতি ও অপকর্ম ধামাচাপা দিয়ে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করার অপচেষ্টা করছেন। তার এ সমস্ত কর্মকাণ্ডে তার ও কেজিডিসিএলের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে একটি স্ক্যাভেটর ও পাঁচটি ডাম্পার জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধআসছে শীত, বাড়ছে অগ্নিঝুঁকি