বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক, দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে তার নাম রাখা হয়। সবার ছোট রাসেল ভাই বোনের আদরে বড় হতে থাকে। কিন্তু জন্মের সময়ও বাবা কাছে ছিল না এবং তার শৈশব জীবনেও বাবাকে তেমন কাছে পায়নি। বাবার সাথে দেখা করার একমাত্র স্থান হয়ে উঠে কারাগার। এরপর সাত বছর বয়সে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নিজেও বন্দী হয়ে পড়েন। তার শিক্ষকদের কাছে জানা যায় তিনি শিক্ষকদের সম্মান করত, কোনো কিছু শেখালে তা আজীবনের জন্য মনে রাখত। তার বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ ও আন্তরিকতায় সবাই মুগ্ধ হতো।
ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন রাসেল সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘আমি শিশুটিকে স্বাধীনতার স্বপ্নের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করি। শৈশব থেকেই তার দেশপ্রেম ছিল, যা তার পরিবার থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত’। শৈশবে তার দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-সাইকেল। তার স্বপ্ন ছিল সেনা অফিসার হবে। গ্রামে গেলে বাচ্চাদের প্যারেড করাতো আর কাপড় চোপড় দিতো। তার মন ছিল উদার।
১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকরা তাকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মৃতদেহের পাশ দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সবার শেষে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছিল। সাথে সাথে হত্যা করা হয়েছে একটি অঙ্কুরিত স্বপ্নের।
শেখ রাসেল আজ বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু, কিশোর, তরুণ, শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে একটি আদর্শ ও ভালোবাসার নাম। অবহেলিত, অধিকার বঞ্চিত শিশু কিশোরদের আলোকিত জীবন গড়ার প্রতীক হয়ে তিনি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক এটাই জাতির প্রত্যাশা। শেখ রাসেলের এই এগারো বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনের সংগ্রাম, কষ্ট, যুদ্ধকালীন সময়ে নানা ঘাত প্রতিঘাতে বেড়ে ওঠার কাহিনি ভবিষ্যত শিশুদের জানা উচিত।