নগরীতে কয়েক বছর আগে প্াচলাইশ ও জোরারগঞ্জে দুই শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর ধর্ষণের পৃথক ঘটনায় আদালত দুই অভিযুক্ত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপশি তাদের মধ্যে একজনের আরও অতিরিক্ত চৌদ্দ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। গতকাল নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৭’র বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদের আদালত পৃথক এ দুটি মামলার শুনানি শেষে আসামিদের জন্য এ সাজার রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আইনুল হাসান রনি (২৮) ও ইকবাল হোসেন প্রকাশ ফারুক ড্রাইভার (৪১)। একই ট্রাইব্যুনাল পৃথক দু’টি মামলায় তিন আাসমিকে খালাস দিয়েছেন। নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আরিফুল আলম আজাদীকে বলেন, জোরারগঞ্জের ঘটনায় আদালত আসামি আইনুল হাসান রনিকে ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছেন। এ অর্থদণ্ড অনাদায়ে আসামিকে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই আসামির বিরুদ্ধে মামলায় অপহরণের অপরাধে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড রায় দেন। এ অর্থদণ্ড অনাদায়ে আসামিকে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এর আগে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সকল সন্দেহের ঊর্ধ্বে প্রমাণিত করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দিয়েছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী। এরা হলেন, মো. সায়েম (৩০), নাঈম উদ্দিন (২৫)।
২০১৫ সালে ১৪ মে জোরারগঞ্জে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয় জোরারগঞ্জ থানায়।
মেয়েটির মায়ের করা মামলার এজাহারে স্কুল যাওয়ার পথে বারইয়ারহাট-করেরহাট সড়ক থেকে মেয়েটিকে সিএনজিতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। একই বছর ৬ সেপ্টেম্বর জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ এ মামলায় আসামি আইনুল হাসান রনি, সায়েম ও নাঈমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। এ মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।
নগরীর পাঁচলাইশে পৃথক ঘটনার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, ২০১২ সালে পাঁচলাইশে এক কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় ইকবাল হোসেন ফারুককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এ অর্থদণ্ড অনাদায়ে আসামিকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একই মামলায় আাসমি উত্তম কান্তি রুদ্র নামে একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ২০১২ সালে ২৬ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মেয়র গলি এলাকায় আঠারো বছর বয়সী ওই কিশোরী অপহরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেয়েটির মা বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার রাঙামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। ওই কিশোরী একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের পিপি বলেন, ২০১২ সালে ৮ জুলাই মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ওই কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের ঘটনায় দু’জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ট্রাইব্যুনালে ৬ সাক্ষীকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান তিনি।