অনলাইন আবেদনেই মিলবে প্রিপেইড মিটার

২৪১ কোটি টাকার এক লাখ মিটারের প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

ডকুমেন্ট, নথি নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে হবে না। পড়তে হবে না তৃতীয় পক্ষের হয়রানিতে। অনলাইনে আবেদন করেই মিলবে কর্ণফুলী গ্যাসের প্রিপেইড মিটার। ২৪১ কোটি টাকার এক লাখ প্রিপেইড মিটার ‘ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্ট (ইন্সটলেশন অফ প্রিপেইড গ্যাস মিটার ফর কেজিডিসিএল পার্ট-৩)’ প্রকল্পটিতে সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য এমন সুযোগ রাখা হচ্ছে।
প্রকল্প নির্ধারিত এলাকার মধ্যে ‘আগে ক্লিক, আগে সংযোগ’ ভিত্তিতে যিনি আগে আবেদন করবেন, তিনি আগে প্রিপেইড মিটার পাবেন। এমন সুবিধা রেখে ডাটাবেজ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রামে সরকারিভাবে গ্যাসের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে ডাটাবেজ তৈরির বিষয় নিয়ে চুয়েটের (চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) সাথে আলোচনা শুরু হয়েছে। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব কথা বলেন। নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কেজিডিসিএল।
কেজিডিসিএল সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে আবাসিক গ্রাহকদের ব্যবহৃত গ্যাসের অপচয় রোধে তৃতীয় প্রকল্পটি হাতে নেয় কেজিডিসিএল। এক লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রায় ২০ মাস আগে নেওয়া প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। পরে পরিবর্ধন, পরিমার্জন হয়ে ২৪১ কোটি টাকায় নির্ধারিত হয় প্রকল্প ব্যয়। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২৪ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর প্রকল্প ব্যয়ের বিষয়ে সম্মতি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর গত মে মাসের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অনুমোদন পায় প্রকল্পটি।
প্রকল্পটির আওতায় নগরীর বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, পাহাড়তলী, খুলশী, বাকলিয়া, সদরঘাট, কোতোয়ালী, হালিশহর, ডবলমুরিং, বন্দর, ইপিজেড, পতেঙ্গা, আকবরশাহ ও জেলার কর্ণফুলী, হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলার গ্রাহকদের পুরনো মিটারের স্থলে এসব প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে।
জানা গেছে, জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রথম প্রকল্পের ৬০ হাজার প্রিপেইড গ্রাহকরা পিওএস (পয়েন্ট অব সেলস) স্টেশন থেকে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ক্রেডিট কিনে প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করে গ্যাস ব্যবহার করেন। ১ লাখ প্রিপেইড মিটার প্রকল্পে গ্রাহকরা ঘরে বসে মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইনের মাধ্যমে প্রিপেইড বিল পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।
কেজিডিসিএলের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে বলেন, কর্ণফুলী গ্যাসের ৬০ হাজার প্রিপেইড মিটার সংযোজনের প্রথম প্রকল্পে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। জাইকার অর্থায়নে প্রথম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলেও এবারের এক লক্ষ প্রিপেইড মিটার প্রকল্পটি সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে কর্ণফুলী গ্যাস। মিটারের মূল্য গ্রাহকদের কাছ থেকে সমান কিস্তিতে আদায় করা হবে, যা বিলিং সফটওয়্যারে সংযুক্ত থাকবে।
কর্ণফুলী গ্যাসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, আগের প্রকল্পটিতে জাইকার অর্থায়ন থাকায় তাদের কিছু শর্ত মানতে হয়েছে। এখন যেহেতু উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি, সেখানে সরকারি ক্রয়নীতি অনুসরণ করা হবে। প্রথম প্রকল্পে সংযুক্ত মিটারগুলো জাপানি হওয়ায় টেকসই হয়েছে। বড় কোনো সমস্যা নিয়ে অভিযোগও তেমন নেই। তবে নতুন প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারদের প্রস্তাবনার ওপর নির্ভর করবে কোন মিটার সংযুক্ত হবে।
কর্ণফুলী গ্যাসের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, প্রিপেইড না হওয়া মিটারগুলোর গ্রাহকরা গড়ে মাসে ৬৬ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেন। কিন্তু সংযোজিত প্রিপেইড মিটার গ্রাহকরা গড়ে ৪০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছেন। এতে একটি মিটারে মাসে ২৬ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ও কর্ণফুলী গ্যাসের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলমকে ফোন করা হলে তিনি প্রকল্পের বিষয়ে আগাম কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্ধবীর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার তরুণী
পরবর্তী নিবন্ধনয়া আপদ পার্লাইট পাউডার