অনলাইনে গেমের নামে জুয়া পাচার কোটি কোটি টাকা

অনুদান পাওয়া গেম ডেভেলপারসহ গ্রেপ্তার ৬

| মঙ্গলবার , ১ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজশে দেশে অনলাইনে ‘তিন পাত্তি গোল্ড’সহ বিভিন্ন জুয়া পরিচালনার অভিযোগে রাজধানীতে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত রোববার রাতে মহাখালী ও উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তারের কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গ্রেপ্তাররা হলেন জামিলুর রশিদ (৩১), সায়মন হোসেন (২৯), মো. রিদোয়ান আহমেদ (২৯), মো. রাকিবুল আলম (২৯), মো. মুনতাকিম আহমেদ (৩৭), ও কায়েস উদ্দিন আহম্মেদ (৩২)। তাদের মধ্যে জামিলুর রশিদ এই অনলাইন জুয়া চক্রের হোতা জানিয়ে র‌্যাব বলছে, পাঁচ বছর আগে দুটি গেম ডেভেলপ করার জন্য সরকারের কাছ থেকে অনুদান পেয়েছিলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের। পাশের দেশের একটি কোম্পানির জুয়ার অ্যাপ ‘তিন পাত্তি গোল্ড’ বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেন জামিলুর। আর এর জন্য তিনি বাংলাদেশে উল্কা গেমস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি খোলেন।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে গতকাল কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে কমান্ডার মঈন বলেন, গেম ডেভেলপমেন্টের নামে অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দেশের বাইরে পাঠানোর তথ্য পায় র‌্যাব। পরে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি বৃদ্ধি করে। ওই চক্রের হোতা উল্কা গেমস লিমিটেডের সিইও জামিলুর রশিদ। ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী দেশের একটি প্রতিষ্ঠান মুনফ্রগ ল্যাবের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। ২০১৮ সালে মুনফ্রগের বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে দেড় লাখের বেশি টাকার বেতনে যুক্ত হন তিনি।
র‌্যাব জানায়, মুনফ্রগ ল্যাবের অনলাইন জুয়া অ্যাপ তিন পাত্তি গোল্ডের জনপ্রিয়তা বেড়ে গেলে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে জামিলুর উল্কা গেমস প্রা. লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। দেশে গেম ডেভেলপমেন্টের অনুমোদন থাকলেও অনলাইন জুয়া বা ক্যাসিনোর অনুমোদন না থাকায় উল্কা বিভিন্ন ভুল তথ্য উপস্থাপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে আইনি বৈধতা পায়।
তিন পাত্তি গোল্ড : তিন পাত্তি গোল্ড মূলত একটি অ্যাপ, যা মোবাইলে ডাউনলোড করে খেলা যায়। র‌্যাব জানায়, এই অ্যাপের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ মুনফ্রগ ল্যাবের হাতে। এটি ছাড়াও রাখি, আন্দর বাহার ও পোকার নামেও অনলাইন জুয়ার গেমস রয়েছে।
মঈন বলেন, তিন পাত্তি গোল্ডে রেজিস্ট্রেশনের পর একজন গ্রাহককে খেলার জন্য কিছু চিপস ফ্রি দেওয়া হয়। সেগুলো শেষ হয়ে গেলে গেম খেলতে টাকা দিয়ে চিপস কিনতে হয়। মূলত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চিপস কেনার লেনদেন হতো। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার কোটি চিপস বিক্রি হয় এবং প্রতি কোটি চিপস বিভিন্ন পর্যায়ে ৪৬ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। বর্তমানে তিন পাত্তি গোল্ডের প্রায় ৯ লাখ নিয়মিত গেমার রয়েছেন এবং প্রতিদিন প্রায় ৩০ লাখ টাকার চিপস বিক্রি হয় বলে জানাচ্ছে র‌্যাব। বর্তমানে উল্কা গেমসের চারটি অ্যাকাউন্টে ৮০ কোটির বেশি টাকা রয়েছে। গত দুই বছর তারা মুনফ্রগ ল্যাবকে ব্যাংকের মাধ্যমে ২৯ কোটি টাকা পাঠিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই
পরবর্তী নিবন্ধকুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে আসামি নজির