অনলাইনে কচিকাঁচারা

রুবি নন্দী | রবিবার , ১০ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

প্রতিনিয়ত ছাত্রদের পদচারণায় মুখর থাকতো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তাদের বিভিন্ন দুরন্ত কার্যকলাপে সারাদিন অসংখ্য নালিশের শালিশ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন ডিসিপ্লিনের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষকগণ। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে যখন স্কুলে যেতে হয়, ভীষণ ভাবে মিস করি ছাত্রদের। এখন ক্যাম্পাসে শুধুই নিস্তব্ধতা। বছরের শুরুতে সকালের কাঁচা রোদ মেখে আধোঘুম চোখে সাদা ইউনিফর্ম পরা কচিকাঁচারা যখন সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়ায়,তখন তাদের দেখে মনে হয় থোকা থোকা সাদাফুল। সঠিক পরিচর্যায় ওরা একদিন ফুলের মতো সুবাস ছড়াবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। বিশাল ক্যাম্পাসে বিশেষ করে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হওয়া ছাত্ররা ভয়ে ভয়ে বাবা-মায়ের হাত ধরে প্রথম বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয় তাদেরকে আপন করে নেয়। শিক্ষকেরা হয়ে উঠেন আপনজন।তাই হয়তো ছাত্ররা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সেই প্রাণকেন্দ্রে ফেরার। অনলাইন ক্লাসে ছোটদের উপস্থিতি ছিলো বেশ সন্তোষজনক। এমন কি হাতের লেখা ক্লাসে পর্যন্ত ছাত্ররা যথেষ্ট মনোযোগী ছিলো।
যেহেতু গুগল মিটে, ক্লাস নেওয়ার সময় ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে কথোপকথনের সুযোগ আছে, নির্দ্বিধায় খাতাও দেখাতে পারছে। প্রযুক্তির এই সুযোগ-সুবিধা গুলোই ছোটদের বেশি উৎসাহিত করেছে বলে আমি মনে করি। ক্লাস চলাকালীন সময়ে কেউ কেউ বলতো, “টিচার আমি অসুস্থ” ঠিক স্কুলের মতো।আসলে সে চাইছে টিচার তার অসুখ শুনে সহানুভূতি পূর্ণ কিছু বলুক।এটাই স্বাভাবিক। আবার কেউ বলতো টিচার, টয়লেট প্লিজ!সত্যি এই কচিকাঁচাদের সততায় আমি মুগ্ধ হতাম। কারণ অনেকসময় বড়ছাত্রদের দেখেছি ক্লাস অন করে ঘুমাতে কিংবা গেইম খেলতে।একদিন হালকা সর্দি ছিলো বিধায়, ক্লাস নেওয়ার সময় প্রিয় ছাত্ররা উৎকন্ঠিত হয়ে বলেছিলো,টিচার আপনি কি অসুস্থ? গলাটা কেমন যেনো শুনাচ্ছে।এমন নিঃস্বার্থ, নির্ভেজাল ভালবাসার কাছেই নিজেকে উজাড় করে দেওয়া যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
পরবর্তী নিবন্ধআমেরিকা-কানাডার পথে