অত্যাধুনিক পেট্রল বোট এলো বন্দরের জন্য

ব্যয় ২২ কোটি টাকা, পাইলট আনা-নেয়াসহ দুর্যোগের সময় উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেবে

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৬ মে, ২০২২ at ৪:৪৭ পূর্বাহ্ণ

ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট না ঘুরে সরাসরি ইউরোপ থেকে চট্টগ্রাম এসে পৌঁছেছে অত্যাধুনিক হাই স্পিডের একটি পেট্রল বোট। ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক এই স্পিডবোট সংগ্রহ করা হয়। চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে সরাসরি চলাচলকারী জাহাজ এমভি সোঙ্গা চিতায় করে স্পিডবোটটি চট্টগ্রামে পৌঁছে। এই ধরনের অত্যাধুনিক এবং দ্রুতগতির স্পিডবোট বহরে যুক্ত হওয়ায় বিশ্বের শিপিং সেক্টরে চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য অত্যাধুনিক একটি হাই স্পিডের পেট্রল বোট সংগ্রহের চেষ্টা হচ্ছিল অনেকদিন ধরে। গত বছর এই ধরনের একটি পেট্রল বোট কেনার উদ্যোগ নেয়া হয়। ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে বোটটি কেনা হয়। এটি তৈরি হয়েছে ইতালির একটি ইয়ার্ডে। নির্মাণ শেষে বোটটি ইতালির রেনেভা বন্দর থেকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম-ইতালি রুটে চলাচলকারী এমভি সোঙ্গা চিতা জাহাজে বোঝাই করে বোটটি পাঠানো হয়। ২২ দিনের যাত্রা শেষে গতকাল সকালে স্পিডবোটবাহী এমভি সোঙ্গা চিতা বন্দরের সিসিটি জেটিতে নোঙর করে।
সোঙ্গা চিতাকে বহির্নোঙর থেকে সিসিটি জেটিতে আনার সময় বন্দরের শক্তিশালী টাগবোট কান্ডারী ১০ ও ১২ সহায়তা করে।
চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য ইউরোপ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। সবসময় সিঙ্গাপুর, কলম্বো কিংবা মালয়েশিয়ার বন্দরগুলো ঘুরে এসব যন্ত্রপাতি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। এই প্রথম কোনো ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট না ঘুরে সরাসরি ইউরোপ থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাল বন্দরের একটি স্পিডবোট। বিষয়টিকে চট্টগ্রাম-ইউরোপ সমুদ্র বাণিজ্যের মাইলফলক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বোটটি আজ সিসিটি ইয়ার্ডে নামানো হবে।
সোঙ্গা চিতায় বিশেষ ব্যবস্থাপনায় স্পিডবোট আনা হয়। জাহাজে কন্টেনার লোড করার সময় চারপাশে কন্টেনারের মাঝে একটি খোপ তৈরি করা হয়। খোপের মাঝে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হয়, যাতে কোনো কন্টেনারের সাথে ধাক্কা না খায়। গতকাল বার্থিং নেয়ার পর সোঙ্গা চিতা থেকে খালি কন্টেনার নামানো শুরু হয়েছে। কন্টেনার নামানো শেষে স্পিডবোটটি নামানো হবে। কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষে বোটটি বন্দরের নৌবিভাগের হাতে ন্যস্ত করা হবে। এটি পরিচালনার জন্য দক্ষ একটি টিম গঠন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক আজাদীকে জানান, এই ধরনের একটি হাইস্পিড বোট আমাদের খুবই দরকার ছিল। এটি ৬০ নটিক্যাল মাইল বেগে ছুটতে পারবে। ১৬ দশমিক ৫ মিটার লম্বা ও ১ দশমিক ২ মিটার ড্রাফটের পেট্রল বোটটি বন্দরের সার্ভিস জেটিতে থাকবে। এটি পাইলট আনা-নেয়াসহ দুর্যোগের সময় উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেবে।
তিনি বলেন, ১৬ জন ধারণক্ষমতার বোটটি যে কোনো পরিস্থিতিতে চলাচল উপযোগী। ঝড়ের কবলে পড়ে যদি এটি সাগরে উল্টে যায়, তাৎক্ষণিকভাবে ঘুরে সোজা হয়ে স্বাভাবিক অবস্থান নিতে পারবে। বোটটি সর্বাধুনিক নেভিগেশনাল ইকুইপমেন্ট সমৃদ্ধ। এতে স্যাটেলাইট রাডার, স্যাটেলাইট কম্পাস, ২টি ইঞ্জিন, ৩টি জেনারেটরসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের যন্ত্রপাতি রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগমের বাজার ঊর্ধ্বমুখী
পরবর্তী নিবন্ধআগে কেনা সয়াবিন নতুন দরে বিক্রি