অগ্রিম কর কমালে বাড়বে নতুন বিনিয়োগ

বাজেট ভাবনা : ইস্পাত শিল্প

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৬ মে, ২০২১ at ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নতির ধারাবাহিকতায় দিনে দিনে পরিসর বাড়ছে ইস্পাত শিল্পের। অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে বিরাট ভূমিকা রাখছে ইস্পাত। গত ১০ বছরে ইস্পাতের চাহিদা বেড়েছে তিনগুণ। গুণগত ইস্পাত উৎপাদনে ৯০ শতাংশ অবদান রাখছে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলো। এ শিল্পের বার্ষিক টার্নওভার রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। ইস্পাতশিল্পে জড়িতরা বলছেন, রড কিংবা অন্যান্য লৌহজাত পণ্য উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামালের প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর কমানো, উৎপাদিত পণ্যের ভ্যাট কমানোর দাবি জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। এতে করে এ শিল্পে নতুন বিনিয়োগও আসবে বলে জানান তারা।
শিল্প কারখানা থেকে শুরু করে নগরায়নের অবকাঠামো নির্মাণে প্রধান ও প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ইস্পাত। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ থেকে শুরু করে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মীরসরাই অর্থনৈতিক জোন, মহেশখালী-মাতারবাড়ি পাওয়ার হাবসহ দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে অসংখ্য মেগা প্রকল্প। এসব প্রকল্পে ইস্পাতের ব্যবহার এখন সবচেয়ে বেশি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে শিল্প ও আবাসন অবকাঠামো নির্মাণেও দিন দিন চাহিদা বাড়ছে ইস্পাতের। বিশ্বে ইস্পাত ব্যবহারের তালিকায় বাংলাদেশ নিচে থাকলেও এ শিল্পে পিছিয়ে নেই। দেশের ইস্পাত শিল্পে পুরোনোরা যেমন সুনামের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি সময়ের ব্যবধানে আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটাচ্ছে নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোও। এতোদিন চট্টগ্রামের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের ইস্পাত শিল্পের নেতৃত্ব দিয়ে আসলেও সম্প্রসারণশীল এ শিল্পটিতে আরো বড় বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসছে দেশের জায়ান্ট কয়েকটি শিল্পগ্রুপ।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩৫টি ইস্পাত কারখানা রয়েছে। তন্মধ্যে ৩৬টি অটোমেটিক প্রযুক্তির। ১৯৯ টি রয়েছে সনাতনী রি-রোলিং কারখানা। মূলত এসব কারখানা থেকে দেশে লোহার চাহিদা মেটানো হয়। দেশের মোট ইস্পাত উৎপাদনের ৮০ শতাংশই উৎপাদিত হয় চট্টগ্রামের কারখানাগুলোতে। রড উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টন স্ক্র্যাপ আমদানি করে থাকে ইস্পাত কারখানাগুলো। বর্তমানে দেশের ইস্পাত শিল্পে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। গত বছর দেশে ৭০ লাখ টন রড উৎপাদন হয়েছে। টাকার অংকে এটি প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার বাজার। বর্তমানে ইস্পাত খাতে ১২-১৩ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্টিল কারাখানাগুলোতে ব্যবহৃত স্ক্র্যাপের ৭৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বাকী ২৫ শতাংশ দেশীয় শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে পাওয়া গেলেও পরোক্ষভাবে সেটিও আমদানি হয়। স্ক্র্যাপের পাশাপাশি রড তৈরির বেশিরভাগ কেমিক্যালও আমদানি করতে হয়। দেশে বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠান রড তৈরির কাঁচামাল উৎপাদন করছে, যা চাহিদার একেবারে নগন্য। এসব কেমিক্যাল উৎপাদনে প্রণোদনা দেওয়া গেলে দেশেই কাঁচামাল উৎপাদনে নতুন করে বিনিয়োগ আসবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিফান্ড ফেরতের পদক্ষেপ নিতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধকঠোর কর্মসূচির দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা