জলকেলি আর নাচে–গানে বান্দরবানে শেষ হলো মারমা সমপ্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব। গতকাল শুক্রবার উৎসবের শেষদিন সন্ধ্যায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাথে এই রঙিন উৎসবে শামিল হয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইতালির রাষ্ট্রদূত ও নেদারল্যান্ডস’র রাষ্ট্রদূত।
অনুষ্ঠানে ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, সাংগ্রাই উৎসবের বর্নিল আয়োজন ভীষণ ভালো লেগেছে। এই উৎসবে ফুটে উঠেছে পাহাড়ের সৌহার্দপূর্ণ সমপ্রীতির রং। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ুক রঙের এই উৎসব, শুভ সাংগ্রাই।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, ভীষণ ভালো লাগলো সাংগ্রাই উৎসবের বর্নিল আয়োজন। তিন পার্বত্য জেলায় ব্যতিক্রম বান্দরবান। এখানে এগারোটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’সহ বারোটি সমপ্রদায়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি বাংলাদেশের সম্পদ। এই সমপ্রীতি ধরে রাখতে হবে আমাদের। সৌহার্দপূর্ণ বসবাসের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, হুট করে কোনো কিছু সম্ভব নয়, আপনাদের জন্য আমি কিছু করতে চাই। আমাকে কিছুদিন সময় দিতে হবে। রঙের এই উৎসব ধরে রাখতে হবে। পাহাড়ের উৎসব বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি বাংলাদেশকে আন্তজার্তিকভাবে উপস্থাপন করে। উৎসব আয়োজনের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে, উৎসব হলো পাহাড়ের প্রাণ। খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি থেকে পুরোটাই ব্যতিক্রম বান্দরবানের সাংগ্রাই উৎসব আয়োজন। রঙের এই উৎসব দেখে আমি মুগ্ধ।
বান্দরবানের স্থানীয় রাজারমাঠে ছয় দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের শেষদিনে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কংকন চাকমা, সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল এএসএম মাহমুদুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ্ কাওছার, উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি চনুমং মারমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সাংগ্রাই উৎসবের শেষদিনেও সাংগ্রাই উৎসবের মূল আকর্ষণ মৈত্রী পানি বর্ষণ ও জলকেলিতে মেতে উঠেছিল পাহাড়ের মারমা সমপ্রদায়ের তরুণ–তরুণীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, বম, ম্রো’সহ এগারোটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। কেন্দ্রীয়ভাবে জেলা সদরে মূল অনুষ্ঠানমালার শেষদিনে উৎসব পরিণত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের মিলনমেলায়।