শেখ কামাল অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় চট্টগ্রামের

| বুধবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত শেখ কামাল অনূর্ধ্ব১৮ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা দল। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বে লক্ষীপুর, খাগড়াছড়ি আর বান্দরবান জেলার বিপক্ষে জিতে বেশ তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু সেমিফাইনালে কুমিল্লার কাছে গিয়ে ধরাসায়ী হতে হলো চট্টগ্রামকে। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট কিংবা সিনিয়র, কুমিল্লার সাথে পেরে উঠেনা চট্টগ্রাম। সেটা আরো একবার প্রমাণিত হলো। দেশের সবচাইতে ধনী ক্রীড়া সংস্থার বয়স ভিত্তিক একটি ক্রিকেট দলের এমন হতাশা জনক পারফরম্যান্স প্রমাণ করে তারা উপরে ফিটফাট সত্যিকার অর্থে ভেতরে সদরঘাট। উপরে চাকচিক্য আছে কিন্তু খেলাধুলায় কিছু নেই। গত দশ বছরে কি ফুটবল আর কি ক্রিকেট জাতীয় পর্যায়ে কোন অর্জণ নেই এই সংস্থার। অথচ কত কিছুই আছে সংস্থাটিতে। নেই শুধু মাঠের খেলাধুলা। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটের কথা আসলেই বরাবরই অভিযোগ উঠে দল গঠনে স্বজনপ্রীতি আর একাডেমি প্রীতির। এবারেও ছিল একই অভিযোগ। আর সে অভিযোগের সত্যতা মেলে যখন মাঠে গিয়ে ক্রিকেটাররা পারফর্ম করতে পারেনা। শুধু তাই নয় জেলা দলের এক কোচ বলেছিলেন যে সব ক্রিকেটারকে দলে নেওয়া হয় সে সব ক্রিকেটার যোগাযোগ করে তাদের একাডেমির কোচের সাথে। তাদের কথা মতই নাকি মাঠে খেলে।

শুধু তাই নয় ঐ কোচের অভিযোগটা এতটাই গুরুতর ছিল যে ঐ সব একাডেমির কোচরা তাদের ছাত্রদের বলে দেন কোনরকমে ৩০/৪০ রান করতে পারলে হবে। আর বেশি করার দরকার নেই। কারন এই স্কোরই তাকে পরের ম্যাচে খেলা নিশ্চিত করে দেবে। এমন যদি হয় অবস্থা তাহলে উন্নতিটা কিভাবে হবে সেটা সহজেই অনুমেয়। গতকাল কুমিল্লা স্টেডিয়ামে ৩৩ রানে হেরেছে চট্টগ্রাম স্বাগতিক কুমিল্লার কাছে। প্রতিপক্ষকে ১৫৯ রানে অল আউট করে দিলেও নিজেরা অল আউট হয়ে গেছে ১২৬ রানে। যেখানে চারজন ব্যাটসম্যান আউট হেেছ শূন্য রানে। সাতজন ব্যাটসম্যান ফিরেছে দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগে। তাহলে দলে আর থাকে কি। যদিও দলের কোচ এবং বিসিবির জেলা কোচ মাহবুবুল করিম মিঠু বলছেন বাজে আম্পায়ারিং এর কথা।

চট্টগ্রামের ইনিংসে এলবিডব্লিউ হয়েছে দুজন। একজন ৭ নাম্বার ব্যাটসম্যান অপরজন ৯ নাম্বার ব্যাটসম্যান। তাহলে বাকিরা করল কি ? এভাবে নানা দোহাই দিয়ে আর কতদিন চলবে চট্টগ্রামের ক্রিকেট। এক সময়ের প্রতাপশালী চট্টগ্রাম জেলা দল এখন পেরে উঠেনা ছোট দল গুলোর সাথেও। তার মানেটা একেবারেই পরিষ্কার। তারা ক্রমশ এগিয়ে গেছে আর চট্টগ্রাম ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছে। অথচ এই শহরে ব্যাঙের ছাতার মত ক্রিকেট একাডেমি। যখন দল গঠনের জন্য বাছাই হয় তখন সে সব একাডেমির কোচদের দৌড়ঝাপের শেষ থাকেনা। কিন্তু সে সব একাডেমি গুলো ক্রিকেটারদের কি শেখায় সেটা পরিষ্কার হয়ে যায় যখন তারা মাঠে খেলতে নামে। আর তখন তোলা হয় নানা অজুহাত। মাঠ খারাপ, উইকেট খারাপ, আম্পায়ারিং বাজে, ইচ্ছে করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব করে হয়তো নিজেদের মান বাঁচানো যাবে কিন্তু চট্টগ্রামের ক্রিকেটের মান বাঁচানো যাবেনা। যে দল ১২৬ রানে অল আউট হয় সে দলের বিপক্ষে কি আর বাজে আম্পায়ারিং হবে ? কাজেই এখন অন্তত ভাবার সময় এসেছে কিভাবে চট্টগ্রামের খেলাধুলার উন্নতি করা যায় যেদিকে নজর দেওয়ার। কেবলই নানা অজুহাতের দিকে না হেঁটে খেলাধুলার উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘মেধা পাচার’কে কেন্দ্র করে ধারাবাহিক
পরবর্তী নিবন্ধবনফুল ২য় বিভাগ ফুটবল লিগ ৭ ডিসেম্বর শুরু