শুকিয়ে গেছে সর্তা খাল

সেচ সংকটে অনিশ্চিত চাষাবাদ

মীর আসলাম, রাউজান | রবিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়ি ঢলে বালু এসে ভরাট হয়ে গেছে সর্তা খাল। শুষ্ক মৌসুমে খালের পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় চাষাবাদে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। সেচের অভাবে দুশ্চিন্তায় খালের ওপর নির্ভরশীল রাউজানের কয়েক হাজার কৃষক। নিয়মিত খাল খনন না হওয়া ও বিভিন্নস্থানে প্রভাবশালীরা অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করায় হাজারো পরিবারের রুটির যোগান দেয়া এ খালটি বর্তমানে পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে। খালের কিছু অংশ এখন শুকিয়ে নালায় পরিণত হয়েছে।

সর্তা খালের উৎপত্তিস্থল র্পা্বত্য জেলার দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে। খালটি রাউজানের হলদিয়া, নোয়াজিশপুর, গহিরা, ফটিকছড়ির নানুপুর, খিরাম, বক্তপুর, ধর্মপুর, আবদুল্লাহপুর হয়ে রাউজানের গহিরায় এসে হালদা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড় কাটার ফলে মাটি ও বালু এসে ভরে উঠেছে খালের তলদেশ। খালের রাউজান অংশের হচ্চারঘাট এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়কয়েক কিলোমিটার দৃষ্টিসীমার মধ্যে খালটির তলদেশ ভরে গেছে বালুতে। দুপাড়ের কৃষকরা ফসলী জমি, ক্ষেত খামারে পানির জন্য খালের তলদেশে স্যালো পাম্প বসিয়ে রাখলেও পাচ্ছেন না পানি। কৃষকরা জানান, এবার শীত মৌসুমে যারা চাষাবাদ করেছে পানি অভাবে তাদের জমি শুকিয়ে মরতে শুরু করেছে।

হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রচীনকাল থেকে এই খালের পানিতে কৃষকরা হাজার হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করতো। গত কয়েক বছর থেকে খালটির পূর্বাংশে (পার্বত্য জেলা) নির্বিচারের পাহাড় কাটা ও পাহাড় ধসে খালটির তলদেশ বালুতে ভরাট হয়ে গেছে। একারণে নিচের দিকে পানি নেমে আসতে পারছে না। তিনি মনে করেন, খালের তলদেশ থেকে বালু উঠিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা না গেলে অদূর ভবিষ্যতে খালের দুই পাড়ের হাজার হাজার কৃষক তাদের জমি অনাবাদি রেখে দিবে।

নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরোয়ার্দ্দি সিকদার বলেন, তার ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সর্তা খালের বিশাল অংশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় শুষ্ক মৌমুমে পানির অভাবে মানুষ চাষাবাদ করতে পারছে না। আবার বর্ষার সময় এই খাল হয়ে তীব্র স্রোতে পাহাড়ি ঢল নামতে গিয়ে খালের পার ভাঙছে। এই পরিস্থিতিতে ভরাট হয়ে যাওয়া খালের অংশ পরিষ্কার করা হচ্ছে, ভাঙনরোধে খালের বাঁক কেটে পানি প্রবাহ নিরাপদ করে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে সর্ত খালের দুপারের কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, ফটিকছড়ির কতিপয় প্রভাবশালী উপরের দিকে বিভিন্নস্থানে বাঁধ দিয়ে কৃষিকাজের পানির সুবিধা নিচ্ছে। অথচ নিচের দিকে থাকা কৃষকরা পানি পাচ্ছে না। এই অবস্থা থেকে কৃষিজীবীদের বাঁচাতে অবৈধভাবে নির্মিত বাঁধ কেটে দেয়ার পাশাপাশি তলদেশ থেকে বালু উঠিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছে কৃষকরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকেমিক্যালসহ ক্ষতিকর পণ্যবাহী জাহাজেই ভোগ্যপণ্য পরিবহন
পরবর্তী নিবন্ধপর্যটকে মুখর কক্সবাজার