পর্যটকে মুখর কক্সবাজার

হোটেল-মোটেলে শতভাগ রুম বুকড কয়েকগুণ ভাড়া নেয়ার অভিযোগ

এম এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার | রবিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ

বিদায়ের হাতছানি দিচ্ছে শীত। এ বেলায় লাখো পর্যটকে মুখর হয়ে উঠেছে সমুদ্র শহর কক্সবাজার। গত বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় চার থেকে পাঁচ গুণ। তবে অভিযোগ রয়েছে, কিছু হোটেলরিসোর্ট গলাকাটা বাণিজ্য করছে। দুই থেকে তিন হাজার টাকার রুম সুযোগ বুঝে নেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে পর্যটনে বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেলে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, বালিয়াড়িতে পর্যটকদের সরব পদচারণা। তীব্র ঠাণ্ডা পানি উপেক্ষা করে অনেকেই মেতেছিল সমুদ্র স্নানে। জেডস্কি ও বয়া নিয়ে তাদের আনন্দউচ্ছ্বাস অন্যদেরও মাতিয়ে তুলছে। বালিয়াড়িতে দুই কিলোমিটার জুড়ে সারি সারি সাজানো আছে কিটকট চেয়ার। চেয়ারগুলোতে বসে সমুদ্র দর্শন করছেন কেউ কেউ। অনেকেই ব্যস্ত সূর্যাস্ত অবলোকনে। হইহুল্লোড়ের মধ্যে একসময় পশ্চিমা আকাশে অস্ত যায় সূর্য। হিমেল হাওয়ায় তখন অন্যরকম এক আবেশ সৃষ্টি করে পর্যটকদের দেহমনে।

বালিয়াড়িতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের ছবি তুলছিলেন ঢাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৫ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী প্রভা। তিনি জানালেন, কক্সবাজার আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান। বারবার মন চাই এখানে ছুটে আসতে। সমুদ্রের সান্নিধ্যে এসে নিজেকে বেশ উৎফুল্ল মনে হয়।

ঢাকা কল্যাণপুর শুক্রবার কক্সবাজারে আসেন পর্যটক দম্পতি আশরাফ ইসলাম ও সোমাইয়া ইসলাম। বালিয়াড়ির কিটকটে বসে তারা সমুদ্র দেখছিলেন আর গুণগুণ করে গাইছিলেন– ‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি, সাগরের ঢেউয়ে চেপে নীল জল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছ। আমি শুনেছি সেদিন তুমি, নোনাবালি তীর ধরে বহুদূর বহুদূর হেঁটে এসেছ।’ গানের শেষে কথা হয় এ দম্পতির সঙ্গে। তারা জানালেন, সমুদ্র মানে বিশালতার উপমা। এই উপমা বাস্তব জীবনে প্রতিফলন করতে পারলেই আদর্শবান মানুষ হওয়া যায়। তবে এই সৈকতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই এখানে দেশিবিদেশি পর্যটক বাড়বে।

চট্টগ্রামের মেহেদীবাগ থেকে বন্ধুদের নিয়ে আসা মুরাদ মাহমুদ বলেন, শুক্রবার এখানে এসে কোথাও রুম পাচ্ছিলাম না। পরে সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকার সি কিং ও সি কঙ নামের দুটি হোটেলে রুম পাই। কিন্তু এখানে তিন হাজার টাকার রুম ৯ থেকে ১৭ হাজার টাকাও নেওয়া হয়েছে।

কঙবাজার হোটেলমোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার তিন দিন শতভাগ বুকিং। শহরের কমবেশি সব হোটেল মোটেলে কোনো রুম খালি নেই। আমরা চেষ্টা করছি পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কঙবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ বলেন, কঙবাজারের সব পর্যটন স্পট এখন জমজমাট। পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটকদের হয়রানি করা হলে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

কঙবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরান বলেন, সমুদ্র সৈকতকে আরও আকর্ষণীয় করতে কাজ করছে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি। শিগগিরই এই সৈকতের চেহারা আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুকিয়ে গেছে সর্তা খাল
পরবর্তী নিবন্ধউখিয়া সীমান্তে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ